ইসলামি জীবন ব্যবস্থার মূলভিত্তি হলো কুরআন ও সুন্নাহ। মহান আল্লাহ মানুষের কল্যাণে জীবন বিধান হিসেবে প্রিয় নবিজির মাধ্যমে গাইড স্বরূপ দান করেছেন আল-কুরআন। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে নবিজির সুন্নাহ। ইরশাদ হচ্ছে—‘আর রাসুল তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো।’—[সুরা হাশর, আয়াত : ৭] সুন্নাহ মুমিনের অলংকার। জান্নাত লাভের অন্যতম সোপান। রাসুল্লাহ সা. এর সুন্নত পালনেই মুমিনের কল্যাণ ও সফলতা নিহিত। নবিজির জীবন দর্শন ও কর্মে যে যতোটুকু অনুসরণ করবে, সে ততোটুকু কল্যাণ ও সফলতা লাভ করবে। অতএব শান্তি ও নিরাপত্তায় সুন্নত অনুসরণের বিকল্প নেই। আপনি জানেন কি—কিয়ামতের দিন কোন ব্যক্তি আরশের ছায়াতলে আশ্রয় পাবে?, কোন ব্যক্তির জন্য প্রিয় নবিজি জান্নাতের জামিন হবেন?, কোন সে আমল যার মাধ্যমে জাহান্নাম ও কপটতা থেকে মুক্তির আদেশ জারি হয়, এমনকি নবিজির পক্ষে জান্নাতের সুপারিশ ওয়াজিব হয়? আপনার কি জানা আছে—কোন আমলে শারীরিক ও মানসিক সকল রোগের আরোগ্য রয়েছে? কোন আমলে বিনা হিসেবে জান্নাত লাভ হয়? কারা জান্নাতে প্রিয় নবিজির খুব কাছাকাছি থাকবে?—এমন সব চমৎকার সুন্নতের ডালি দিয়ে সাজানো এ গ্রন্থটি। যা আমাদেরকে নবিজির সুন্নত পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালনে অনুপ্রাণিত করবে। জান্নাতের সরল পথে চলতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। নবিজির সুন্নত হোক আমাদের জীবন পথের পাথেয়।
মুহাম্মাদ আলী জাওহার। ইসলামি ধারার সাহিত্য-কাননের এক সুগন্ধি ফুল। যে ফুল তার মনকাড়া সৌরভে মাতোয়ারা করে রেখেছে পাঠকহৃদয়। একযুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি লিখছেন। অনুবাদ করছেন। তার কলম ¯্রষ্টার কথা বলে। বলে সৃষ্টির কথাও। কলমের সাথে মনের মাধুরী মিশিয়ে তিনি এঁকে চলছেন মানুষ ও মানবতার ছবি। দেশ ও জাতির চিত্র। ১৯৮৬ সালের ৫ জুন শরিয়তপুরে জন্মগ্রহণ করা এ গুণীলেখক ছোটবেলা থেকেই প্রখর মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। ১৯৯৬ সালে ঢাকার গুলবাগ হাফেজিয়া মাদরাসা থেকে মাত্র ৬ মাসেই সম্পন্ন করেন পবিত্র কুরআনের হিফজ। কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অর্জন করেন প্রথম স্থান। ২০০৬ সালে জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ থেকে দাওরায়ে হাদিসে লাভ করেন ১ম বিভাগ। এরপর ২০০৮ সালে ঢাকার মুহাম্মদপুরস্থ আল মারকাজুল ইসলামী থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন ইফতা। মেধা তালিকায় অর্জন করেন ২য় স্থান। মাতৃভাষা বাঙলার পাশাপাশি তিনি উর্দু, আরবি, ফারসি ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী। ২০০৯ সালে শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর থেকে দরস-তাদরিসের সাথেই আছেন। বর্তমানে মুহাদ্দিস ও সহকারী মুফতি হিসেবে কর্মরত আছেন দারুল উলুম রামপুরা, ঢাকায়। অধ্যয়ন ও অধ্যাপনের ফাঁকে ফাঁকে খোরাকসমৃদ্ধ লেখালেখিতেই কেটে যায় তার অবসর। তবে তার লেখালেখির হাতেখড়ি ২০০০ সালে। মাদরাসার দেয়ালিকায় নিয়মিত লেখার পাশাপাশি তিনি প্রবন্ধ রচনা ও ফিচার লিখেছেন নামিসব সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকায়। তার পাঠকপ্রিয় লেখাগুলোর মধ্যে রাসুলে আরাবি সা.-এর বাল্যজীবন, মহানবি সা.-এর বক্ষবিদারণ ও তাৎপর্য, কওমি মাদরাসার প্রয়োজনীয়তা, কওমি মাদরাসা আদর্শ মানব তৈরির সূতিকাগার ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গভীর পঠন-পাঠন ও নিবিড় অনুশীলনের মাধ্যমে সাহিত্যের রাজপথ ও বিভিন্ন গলি-ঘুপচি চষে বেড়ানোর পর ২০১২ সালে তিনি প্রকাশ করেন তার প্রথম অনূদিত গ্রন্থ ‘রাসুলুল্লাহ সা.-এর অশ্রু’। এরপর একে একে বাজারে এসেছে হাদিসের আলোকে নেক আমলের ফজিলত (মৌলিক), হাদিসের আলোকে গুনাহের শাস্তি (মৌলিক), ইসলাম ও আধুনিক ব্যবসা বাণিজ্য (অনূদিত), শেষ নবি (অনূদিত), তারা ঝিকিমিকি জ্বলে (অনূদিত) ও আরবি বক্তৃতা সংকলন ইত্যাদি। তাঁর রচিত ও অনূদিত বইগুলো পাঠকমহলে ব্যাপক সমাদৃতও হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর সময় ও হায়াতে বরকত দান করুন। মেধা ও মননে দান করুন সমৃদ্ধি। কলমকে করুন আরও শানিত...!