দহন রোদনভরা রাত। লতা—পাতা, ঘাসের ওপর শিশিরের ফোটা কান্নাঝরা বিন্দু বিন্দু অশ্রু। ভারাক্রান্ত এ রাত আরও দীর্ঘ হচ্ছে। রাত দিন যেখানে সমান সেখানে প্রভাতের কামনাও নিষ্ফল। তাঁর কাছে রাতের চেয়ে ভোরটাও উত্তম নয়। ভাগ্যে তার এ কেমন বিপর্যয় নেমে এলো? হয়রান পেরেশান বাদশাহ মাথা ঠুকে মরেন হতাশার দেয়ালে! তার প্রভাব প্রতিপত্তি সব আজ নিষ্ফল অদৃশ্য এক অসুখের কাছে। তাঁর এ যন্ত্রণা যে কাউকে বুঝানোও সম্ভব নয়। এ ব্যথা বুঝতে প্রয়োজন অনুরূপ যন্ত্রণাদগ্ধ আরেক হৃদয়ের। অভিনয়ের পর্দা দিয়ে মনের দহন বেশিদিন ঢেকে রাখা যায় না। উত্তাপের আগুন একদিন সেই পর্দাকেও জ¦ালিয়ে দেয়। দিনগুলো ফিকে হতে হতে থেমে গেলো সব সুর—ছন্দ! স্বচ্ছ নীলাকাশে মেঘ জমে জমে পুরো আসমান ছেয়ে যায় ঘোরতরো আন্ধারে। বিজলী মেয়ে মেঘের গায়ে চাবুক পিটিয়ে বাদশাহর ওপর বজ্র হাঁকাচ্ছে এখন। বাদশাহ দিশেহারা। অতল অন্ধকারে ঘুরপাক হাবুডুবু খেয়ে খেয়ে বাদশাহর অবস্থা এখন ভঙ্গুর—বেহাল। কী তার ভাগ্য! ‘যখন গাধা ছিলো তখন গদি ছিলো না। যখন গদি পেলো, তাঁর গাধাটিকে বাঘে খেয়ে ফেললো! কিংবা ‘যখন তাঁর কাছে পেয়ালা ছিলো তখন সে পানি পাচ্ছিলো না। যখন পানি পেলো পেয়ালা পড়ে ভেঙ্গে গেলো!’ চিন্তার ভারে বাদশাহ মুষড়ে পড়লেন। এমন খতরনাক অবস্থায় বাদশাহকে নিয়ে সবাই চিন্তিত। তারা এসে বাদশাহর চতুর্দিকে জড়ো হয় এবং নানা শান্ত্বÍনা দেয়।