মানুষ এমন এক জীব, যার ভেতরে প্রতিনিয়ত কথার এক তোলপাড় হতে থাকে তার প্রত্যক্ষণ ও বিচরণ ঘিরে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ তা প্রকাশ না করেই তার নিত্যদিনের পৃষ্ঠাগুলো এক এক করে উলটে অবসানের দিকে তরি চালিয়ে একজীবনের পর্ব চুকিয়ে দেয়। কখনো আবার সংখ্যায় কম হলেও মানুষ তা প্রকাশ করে যে-কোনো মাধ্যমের আশ্রয়ে, কবিতা সেরকমই একটি মাধ্যম, যার দ্বারা ওই না-বলা থলের কথাগুলো বলা হয় নির্দ্বিধচিত্তে। এখানে এই গ্রন্থটিতে সেরকম লক্ষ্য ধরনের কথার থেকেই কিছু কথা সাজহীন, সজ্জাহীন, দ্ব্যর্থহীনভাবে সহজ ভাষায় বলা হয়েছে সময়-নিংড়ানো পটের পটভূমি থেকে কুড়িয়ে কুড়িয়ে, যা না বললেও হতো, না বলেও চলে যাওয়া যেত-যেমন চলছে, চলে যাচ্ছে। কিন্তু যার সর্বাত্মায় কথার তোলপাড় তার দ্বারা কি স্রোতের গায়ে গা ঠেসে পার হয়ে যাওয়া সম্ভব? সম্ভব না বলেই বলতে চাওয়া, বলা সেইসব ছক ও ছবির কথা যেসব ছবির ছত্রছায়ায় রৌদ্রোজ্জ্বল দিনাঙ্কে ঘনরাত্রির তোড়জোড় আর জহর-জারুল ছেনে কহর-কলহ পোষ্য এক কালের কলতান কল্লোলিত আমাদেরই চোখের কোণে, কার্নিশে। অথচ আমরাই সন্ন্যাসী সাজে সমৃদ্ধ সংসার সামিলের সাং লিখে লিখে লতায়িত দারুণ দম্ভে! আড়ালে এ চলতি সংসার দম্ভের, দানবেরই দেউড়ি নয় কি; যেখানে সাপ আর সাপের খোপের যূথবদ্ধতা বর্ণাঢ্য?