হাইউল অর্থের অভাবে কোনো শিক্ষকের কাছে যখন প্রাইভেট পড়তে পারে না, তখন সে খেয়ায় পিতাকে সাহায্য করতে এসে, সাথে করে তার ক্লাসের জটিল বইগুলো নিয়ে আসে। যাত্রীরা যখন খেয়া পারাপার হয়, তখন শিক্ষিত যাত্রীদের কাছে তার ক্লাসের পড়া জিজ্ঞাসা করে বুঝে নেয়। এই খেয়াকে সে মনেমনে তৈরি করেছে তার কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেটখানা... ঘড়ির এলার্ম আর বুয়ার অস্থির অবস্থায় কর্কশ ভাষায় ডাক কানে বাজলেই, অর্ধ ঘুমের মেস পাখিগুলো ঘুম থেকে জেগে ওঠে। আর চলার পথে তাদের দেখতে মনে হয়, আহত পাখির মতো বোবা কান্নায় ঘোরে বেড়াচ্ছে... ছেলে মা’কে জড়িয়ে ধরে চোখের পানি ফেলে দিয়ে বলল, এই চাকুরীটিও মিস হয়ে গেলো মা। মায়ের অন্তরের দুঃখ যখন নাবিকের নৌকার পালের মতো ফুলে ওঠে, তখন মা, নীরব-নির্জনে বেদনার অশ্রু জড়ানোর জন্য, গভীর পুকুরে নেমে মানুষ যাতে বুঝতে না পারে, সাতার কাটে আর কাঁদে। পুকুরের তলদেশে কত দুঃখ যে জমেছে তারাবানুর, একমাত্র পুকুরই তা জানে... আয়নার মতো ঝকঝকে রোদ্রে কতগুলো ভারাক্রান্ত মানুষের ছায়া, রাজপথে হাঁটার সময়, তাদের শূন্য একটি হাত মুঠো করে খোলা আকাশের দিকে তোলে, মেঘের ভেলার মতো চন্দ্র, সূর্য অতিক্রম করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের দিকে যেতে লাগল, তখন তাদের মুখ দিয়ে বের হচ্ছে পাথরের মতো ভারি স্বাধীন কিছু স্লোগানের ধ্বনি। ‘মুখে ভোজন চাই, সংগ্রামী দু’ হাতের কাজ চাই।’ তখন চ্যানেলের লোক ক্যামেরা কাধে নিয়ে মিছিলের সম্মুখে দৌড়াতে লাগল, হরিণের মতো পিছু চেয়ে-চেয়ে....