মানব সভ্যতা আজ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত- চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, কালোবাজারি, ধর্মান্ধতা ইত্যাদি সামাজিক ব্যধি আজ গিলে খাচ্ছে মানব সভ্যতাকে। এদের হিংস্র ছোবলে মানবতা আজ বিপন্ন। মানুষ এখন আর্দশ, সততা, নৈতিকতা ভুলে গিয়ে অন্ধকারের এক অজানা পথে এগিয়ে চলেছে। যে পথ শুধুই অন্ধকার, আলোর লেশমাত্র নেই, এই অবস্থার মাঝেই খুঁজে ফিরছে শান্তির অমিতধারা। কণ্ঠে গরল ঢেলে আহরণ করতে চাইছে অমৃতের স্বাদ। একেই বলে বোকার দিবাস্বপ্ন। আর মূর্খরা বলে এটা আধুনিক সভ্যতার জয় জয়কার। এই আধুনিক সভ্যতার সংজ্ঞা কী? কে দেবে তার উত্তর এবং কে দেবে এর ভরসা ও কিভাবে আসবে মানুষের মুক্তির পথ, ঝলমল আলোর পথের সন্ধান? তাই বিশ্ব মোড়লের তাঁবেদারি না করে সকলকেই এ দায়িত্ব মাথায় নিয়ে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কর্তব্যবোধের চেতনা জাগ্রত করার অনুরোধ করছি। আর এই চেতনা শক্তির আধিকারী হবে একমাত্র প্রকৃত সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি। তিনিই পারেন সঠিক পথের সন্ধান দিতে। একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। স্রষ্টার অস্তিত্ব ছাড়া তিনি অন্য কিছু অনুভব করেন না। তাই আসুন সৎ ব্যক্তির পথ অনুসরণ করি এবং সত্যকে আঁকড়িয়ে ধরি। এই পুস্তকে আমার জীবন থেকে যা শিক্ষা নিয়েছি, জীবনের প্রবাহকে যেভাবে ধাবিত করেছি, জীবনের চেতনা শক্তিকে যেভাবে জাগ্রত করেছি, নৈতিকতাকে যেভাবে আদর্শ রূপে অনুস্মরণ করেছি তাই বলার চেষ্টা করেছি। আমার সব কিছুই যে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হবে তা যেমন সঠিক নয়, ঠিক তেমনি আমার কর্ম যে একেবারে অর্থহীন তাও নয়। জীবন থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তাই কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করে যেটুকু সাফল্য পেয়েছি তার কিঞ্চিতটুকু যদি মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়, তবেই আমার জীবনের স্বার্থকতা পাব। মানুষ তার আশার চেয়ে অনেক বড়। জীবনে যা আশা করেছি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি একমাত্র আমার সততা ও বিশ্বাসের কারণে। কাজেই আমার মতো সততা ও বিশ্বাসের খুঁটিকে যে শক্তভাবে মনে প্রাণে ধারণ করবে তার জন্য জীবন চলার পথ সুগম হবে। এই সকল উপলদ্ধি থেকেই আমার এই আত্মপ্রকাশ, যা একান্তই আমার ভাবনার ও মনের প্রশান্তির জন্য করেছি। তারপরও মানুষ ভুলের উর্দ্ধে নয়, তাই ক্ষমা সুন্দরই হোক আমার বেলায় এটাই সকলের কাছে কাম্য।