কুন্দপ্রভা সেনগুপ্তা একজন মহিয়সী নারী, অগ্নিযুগের এই বীর বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেনের শিক্ষা ও দীক্ষায় স্বদেশপ্রেমে প্রাণিত। জন্মগত ভাবেই তিনি কবি। মাত্র নয় বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু। তাঁর কবিতা, গল্প, রকমারী গদ্য তখনকার সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। এক পর্যায়ে মাস্টারদা সূর্য সেনের সংস্পর্শে এসে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী কর্মকা-ে যুক্ত হন এবং গ্রেফতার হয়ে কারাবরণও করেন। আমার গবেষণাকর্ম গ্রন্থ ‘ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম : মাস্টারদা সূর্য সেন ও সূর্যসাথীরা’ বের করতে গিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকা, কলকাতায় ও বার্মা মুল্লুকে বহু কাজ করতে হয়েছে। অনেকের সাথে কথা বলার সময় কুন্দপ্রভা সেনগুপ্তার নাম ও প্রসঙ্গ বার বার এসেছে। তাঁর বিপ্লবী কর্মকা- ও লেখা-লেখির বিষয়-আশয় সম্পর্কে জানতে পারি। এর আগে তাঁর নাম জানলেও এত কিছু আমি জানতাম না। ১৯৯০ সালের ২ জুলাই মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি এই নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারে একটি টিনশেড ভাড়া বাসায় থাকতেন। খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তিনি মৃদুভাষী ও নিভৃতচারী ছিলেন। আমার দুভার্গ্য যে, আমি এই নগরবাসী হয়েও তাঁর জীবদ্দশায় তাঁকে নিজে চোখে দেখিনি এবং পরিচিত হইনি। তাঁকে যাঁরা চোখে দেখেছেন এবং কথা বলেছেন তাঁদের মুখে শুনেছি ছোট-খাটো গড়ণের কুন্দপ্রভা সেনগুপ্তা উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা ছিলেন। সভা-সমিতিতে খুব একটা যেতেন না। নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। পরিচিতদের সাথে আলাপচারিতায় বেশ গুছিয়ে প্রমিত বাংলায় শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতেন। ছোটদের সাথে তাঁর ভালো সখ্যতা ছিলো। যারা শিশুতোষ লেখা-লেখি করতেন তাদের জন্য তাঁর ঘরের দুয়ার অবারিত খোলা থাকতো। তিনি তাদের লেখা পড়তেন, পাঠ শুনতেন। কখনো তিনি নিজের লেখাও পড়তেন। টানাপোড়েনের সংসার হলেও তিনি অতিথিদের হালকা আপ্যায়নে ভুলতেন না। বিশেষ করে ছোটদের মুখে একটি মিষ্টি বাতাসা হলেও তুলে দিতেন।
Jamal Uddin- গল্পকার জামাল উদ্দীনের লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ ছোটবেলা থেকেই। লিটল ম্যাগাজিন আর দৈনিক পত্রিকার সাময়িকী পাতায় প্রকাশ নব্বই দশকের শুরুতেই। নিজস্ব লিখনশৈলী, চিন্তা-চেতনায় ব্যতিক্রম, স্বকীয়তা আর বিষয়Ñবৈচিত্র্যে ভরা গল্পের জন্য পাঠক সমাদৃত। জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কর্তৃক সদস্য লেখক সম্মাননা প্রাপ্ত। যুক্ত ছিলেন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা আর কথাসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে। দেশে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের গল্প উৎসবের আহ্বায়ক ছিলেন। মঞ্চে গল্প উপস্থাপনার নতুন মাধ্যম ‘স্টোরি থিয়েটার’সহ গল্পের নানা ফর্ম নিয়েও কাজ করেছেন। পেশায় সাংবাদিক। কাজ করছেন দৈনিক ইত্তেফাকে, অর্থনৈতিক সম্পাদকের পদে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা আর নেতৃত্বেও ছিলেন বিভিন্ন সংগঠনে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ২০১৬ মেয়াদের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।