রাত্রির আজ প্রচন্ড মাথা ধরেছে । মনে হচ্ছে যেন মাথার ভেতরটা ছিড়ে যাবে । রোদের দিকে তাকালেই মাথা ব্যথা দ্বিগুন বেড়ে যাচ্ছে , তাই ঘরের সমস্ত জানালার পর্দা লাগিয়ে ঘর অন্ধকার করে শুয়ে আছে সে । ছোট বেলায় বৈশাখের প্রথম দিনই আকাশ অন্ধকার করে কালবৈশাখী ঝড় হতো । সে কি ঝড় ! গাছের ডাল ভেঙে পরতো , বারান্দায় সাজিয়ে রাখা ফুলের টব ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যেত , বাতাস যখন জানালায় এসে আঘাত করতো তখন রাত্রির মনে হতো এখনই বুঝি সব উড়িয়ে নিয়ে যাবে কালবৈশাখী । তারপর ঝড় থেমে যাওয়ার পর শুরু হতো আম কুড়ানোর পালা , গাছের ভাঙ্গা ডালে বসে কাঁচা আম খাওয়া , রাস্তায় রাস্তায় পরে থাকা ফুলের পাপড়ি কুড়িয়ে নিয়ে বইয়ের পাতায় লুকিয়ে রাখা , আরো কত কি ! এখন আর পহেলা বৈশাখে ঝড় আসে না , গ্রীষ্মের তাপদাহে যেন পুড়ে যাচ্ছে শহর , গরমে মানুষ অতিষ্ঠ , আকাশ অতিরিক্ত নীল , কি ক্ষতি হয় আকাশটা একটু মেঘলা হলে ? রাত্রির অবশ্য মাথা ধরার আরো একটি কারণ আছে । আজ রাত্রিকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে । সব মেয়ের জীবনেই এই দিন হয়তো আসে , রাত্রির জীবনেও আসবে এইটাই স্বাভাবিক তবুও রাত্রির খুব টেনশন হচ্ছে । সং সেজে কিছু অচেনা মানুষের সামনে বসে থাকতে হবে এইটা চিন্তা করে বিরক্তও লাগছে । আচ্ছা কেমন হবে পাত্র ? নিশ্চয়ই পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকে দেখবে । যদি বিরক্তিকর হয় , যদি হা করে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে ? অথবা নদীর বরের মতো সরাসরি শরীরের দিকে তাকিয়ে থাকবে না তো ! নদীর জন্য খুব খারাপ লাগে রাত্রির । এতো ভালো একটা মেয়ের কপালে এইরকম একটা পাঁজি বর জুটলো । খুব ইচ্ছে ছিল আজকে নদী কাচের হৃদয়