‘ক্ষুধা’ ইমরান শাহরিয়ারের প্রথম কবিতাগ্রন্থ। এই কবিতা বইয়ে কবি জীবনের নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। প্রথম কবিতা ক্ষুধায় পতিতা, পথে জীবন কাটানো মানুষ, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে জন্মগ্রহণকারী শিুশু এবং দুর্ভিক্ষপীড়িত মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর চিত্র ফুটে উঠেছে। এই শ্রেণির মানুষের কাছে সৃষ্টিকর্তার আনুগত্যের চেয়ে পেটের ক্ষুধা নিবারণ বেশি জরুরি। এই দিক বিবেচনায় কাব্যের নামকরণ সার্থক। পাশাপাশি এই কাব্যে মধ্যবিত্ত ও নিরীহ মানুষ কবিতায় সমাজের নিম্ন মধ্যবিত্তদের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কীভাবে তারা প্রতিক্ষেত্রে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত হয় এবং তাদের সৎ থাকার প্রচেষ্টা এবং অভাবের তাড়নায় ও সুযোগ পেয়ে অসৎ কর্মে জড়িয়ে পড়ার চেতনার উদয় হয় এটা বলা আছে। গণরুম-গেস্টরুম-প্রোগ্রাম ও ফার্স্ট ইয়ার কবিতা দুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম বর্ষের ছাত্রদের উপর যে নির্যাতন চলে তা তুলে ধরা হয়েছে। কবিতা দুটিতে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের অসহায়ত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে। পথহারা পথবাসী ও পথবাসী সমাজ কবিতায় ঢাকা শহরে রাস্তায় বসত করা লোকদের জীবন ক্যাপচার করা হয়েছে। গ্রামের এক স্কুল শিক্ষকের জীবনের করুণ চিত্র ফুটে ফরহাদ মাস্টার কবিতায় এবং অসহায় ফিলিস্তিনিদের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে কোথায় মানবতা কবিতায়। আমার কবিতা আজ ধর্ষিতা, আমার প্রতিভা আজ ধর্ষিতা কবিতায় একজন অসহায় সরকারি কর্মচারীর কবি প্রতিভার বাধ্যতামূলক অপব্যবহারের চিত্র ফুটে উঠেছে। অন্যায় চিকিৎসা কবিতায় সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। অভাগা মোর কৃষককূল কবিতায় কৃষক সমাজের দুর্দশার চিত্র এবং শুভঙ্করের ফাঁকি কবিতায় বিদেশে অবস্থান করে যারা দেশের কল্যাণের উপদেশ দেন তাদেরকে এবং তাদের দোসরদের কটাক্ষ করা হয়েছে। এই কাব্যের সবগুলো কবিতাতেই নির্ধারিত কোনো বিষয়ের বাস্তব চিত্রে উঠে এসেছে, যা পাঠককে ভাবাবে।