বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে স্থানীয়ভাবে সংগঠিত তৎকালীন ফরিদপুর জেলার যে কটি বাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সাহসী ভূমিকা রেখেছিল, সেগুলোর মধ্যে ফরিদপুর সদরের কাজী সালাহউদ্দিন বাহিনীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কাজী সালাহউদ্দিন দেশপ্রেমিক একজন খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন। একজন মানুষ হিসেবে তাঁর আচার-আচরণ, ব্যক্তিত্ব ছিল অনুকরণীয়। তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ, সাহসী, বিচক্ষণ, আপসহীন এবং প্রকৃত দেশপ্রেমিক একজন মুক্তিযোদ্ধা। এককথায় বলতে গেলে তিনি ছিলেন একজন উত্তম চরিত্রের ন্যায়পরায়ণ, আদর্শবান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। কী করে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আক্রমণ শানানো যায়, কী করে তাদের ওপর আঘাত হানা যায়—এটাই ছিল তাঁর চিন্তা। সে কারণে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসেও তিনি শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন সফল কমান্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিভাত করতে পেরেছিলেন। আজ কাজী সালাহউদ্দিন আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু আছে তাঁর গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতি এবং ত্যাগের মহান আদর্শ। বইটি কাজী সালাহউদ্দিন বাহিনীর একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর ভূমিকা এবং একজন সফল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাজী সালাহউদ্দিনের বীরত্বগাথা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ১৯৫৪ সালের ২মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নাছির উদ্দিন বেপারী এবং মাতার নাম হাজেরা খাতুন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি গ্রাম: উত্তর চর মাধবদিয়া, ডাকঘর: মমিন খাঁর হাট, উপজেলা: সদর, জেলা: ফরিদপুর। নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখার হাতেখড়ি। ফরিদপুর হাই স্কুল থেকে ১৯৭০ সালে এসএসসি এবং কামারখালি কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে আইএ পাস করেন। তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম নিয়োগ হিসেবে ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৭৫-৭৬ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। সাবেক ঢাকা জেলার টঙ্গিবাড়ীর ব্রাহ্মণভিটা হাই স্কুলে এবং সোনারগাঁয়ের জি. আর. আই ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ফরিদপুর হাই স্কুলে ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে নিম্নমান সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। এটি লেখকের দ্বিতীয় বই। পাঠকন্দিত প্রথম বইয়ের নাম রক্তের পিচ্ছিল পথ ৭১। লেখক কাজী সালাহউদ্দিন বাহিনীর একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি বর্তমানে ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাশপুরে বসবাস করেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।