'থালীসের গাধা' বইটির ঘটনা ও চরিত্র ইতিহাসচিহ্নিত; গ্রীক জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধারায় এদের উপস্থিতি আছে; আছে প্যাপিরাসের পুঁথিতে, মেসোপটেমিয়ার লোকগাথায়, বাইবেলের জেনেসিসে অথবা ঐতিহাসিক হেরোদোতাস- পলিবুসের লেখায়...অতীতে গ্রিক দেশ বলতে বর্তমানের গ্রিক ভূখণ্ডকে ধরা হতো;-গ্রিক উপনিবেশ ছিল এশিয়া মাইনরের আয়োনিয়ায়, ইতালির সিসিলিতে, ইজিপ্টের আলেকজান্দ্রিয়ায় এবং সাইপ্রাস-ক্রিট সমেত মূল ভূখণ্ডে। এই নানা দেশের গ্রিক উচ্চারণ এক নয়। এর উচ্চারণ কোথাও উ কোথাও হ্রস্ব আ! এবং -এর উচ্চারণ স্থান বিশেষে ই, ঈ অথবা এ। আয়োনিয়ায় দীর্ঘস্বরের প্রাদুর্ভাব ছিল; অন্যদিকে সিসিলির গ্রিক উচ্চারণে নমনীয়তা বেশি, কাঠিন্য কম। এই লেখায়, কুশীলবদের নামোচ্চারণে সেকালীন স্থানভিত্তিক উচ্চারণ মানার চেষ্টা হয়েছে। প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানলেখক আসিমভের বইয়ের সাহায্য ছাড়া উচ্চারণ, সময় বা স্থান নির্ণয় সহজ ছিল না। থালীসের মা ফিনিশীয়-এই গল্প গ্রিক পুঁথিতে পাওয়া যায়। তাঁদের বিয়ের গল্পটি মেসোপটেমিয়ার লোকগাথা থেকে নেয়া। আর থালীস সম্পর্কে সব গল্প-তার গাধা, আর নুনের বোঝা, তার কুয়োয় পড়া ঘানিকল দাদন দিয়ে আটকানো, সূর্য গ্রহণের প্রাগুক্তি ইত্যাদি প্লাতো-আরিস্তোতল, বা ঐতিহাসিক হেরোদোতাসের লেখায় আছে। 'টা' দেবতার পুরোহিতরা দীর্ঘ জীবনের ওষুধ জানতেন-এমন উদ্ধৃতি মিশরীয় পুঁথিতে আছে। আর প্রাচীন মিশরে গাধা ছিল জ্ঞানের প্রতীক। পরে থালীসের কালে, বেবুন বা 'থ' জ্ঞানীর প্রতীক হয়। তবে ইমোটেপ অনেক প্রাচীন বলে সে গাধাকেই জ্ঞানী ধরেছিল; আর তাই নিয়েই তো গল্প। সপ্তর্ষির বশিষ্ট-অরুদ্ধতী নক্ষত্রের মতো গ্রিসে ঐ তারা দুটির নাম ছিল আরিস্তোতল-পিথিয়া। আরিস্তোতলের মৃত্যুকাল বলা হয় আলেকজান্দারের মৃত্যুর এক বছর পর, এথেন্সের বাইরে। তিনি বিতাড়িত হয়েছিলেন; এটুকু ঐতিহাসিক ঘটনা। তাঁর মৃত্যু কোথায়, কেমন ভাবে হয়েছিল জানা যায় না বলে কল্পনা দিয়ে ভরাট করা হলো।