দীপেন ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যে একজন ব্যতিক্রমী লেখক। তার লেখা বাস্তবকে অতিক্রম করে আর একটি মাত্রায় খোঁজ করে, সমাজ ও প্রকৃতির প্রেক্ষাপটে, মানুষের একক ব্যক্তিত্বর দ্বন্দ্ব ও অভিযান; সেই অভিযানের ভিত্তি অনেক সময় বিজ্ঞান হলেও তা মানবিকতার ছোঁয়ায় পরিপূর্ণ। এই বইটিতে তাঁর নতুন-পুরনো আঠারোটি বৈচিত্র্যময় গল্প সঙ্কলিত হয়েছে: প্রত্যেকটি গল্পই পাঠকের মননে দাগ কাটবে, তাকে আবেশিত করবে, বাস্তব ও কল্পনার সীমান্তে দাঁড় করিয়ে দেবে। দীপেন ভট্টাচার্যর নির্মাণের জগতে পাঠককে আমন্ত্রণ। -------- 'শ্যাতোয়ান্ত' অর্থ হলো মণি-প্রতিফলিত উজ্জ্বলতা, 'শ্যাতোয়ান্ত শব্দটি উচ্চারণের মাধ্যমে কি কোনো বৌদ্ধিক আবহাওয়া সৃষ্টি করা সম্ভব? বদলে দেয়া সম্ভব কি পরিপার্শ্ব সম্বন্ধে আমাদের ধারণাগুলি? ধরুণ যদি বলি- কখনো অবহেলায় এই বইয়ের দু একটি গল্প যদি আপনার পড়া হয়ে যায়, আপনার মনে হতে পারে সেই গল্পটি আপনার অতি চেনা, আপনি আগে কোথাও দেখেছেন বা পড়েছেন, কিন্তু ঠিক ধরতে পারছেন না কোথায় বা কবে। স্মৃতির সীমান্তে, বহু দূরের লণ্ঠনের স্তিমিত আলোয়, আপনার মনে হতে পারে সেই গল্পটি আপনার মনের মধ্যে ছিল বহু আগেই। আর তা যদি না থাকে তবে সেটি সংঘঠিত হয়েছিল আপনার ভবিষ্যতে, যে ভবিষ্যতকে আপনি ভুলে গেছেন।
জন্ম ১৯৫৯ সালে। আদি নিবাস এলেঙ্গা, টাঙ্গাইল। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করেছেন। রাশিয়ার মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পদার্থবিদ্যায় মাস্টার্স এবং ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করেন। নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট ইনস্টিটিউটে গবেষক ছিলেন। পরে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড ক্যাম্পাসে গামা রশ্মি জ্যোতির্বিদ হিসেবে যোগ দেন। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বায়ুমণ্ডলের ওপরে বেলুনবাহিত গামা-দুরবিন ব্যবহার করে মহাকাশ গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার মোরেনো ভ্যালি কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। ২০০৬-২০০৭ সালে ফুলব্রাইট ফেলো হয়ে ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও পরিবেশসচেতনতার প্রসারে যুক্ত। তাঁর চারটি গল্পগ্রন্থ ও পাঁচটি বিজ্ঞানকল্প উপন্যাস অভিজিৎ নক্ষত্রের আলো, দিতার ঘড়ি, নক্ষত্রের ঝড় এবং অদিতার আঁধার, নিওলিথ স্বপ্ন। বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের ওপরও তাঁর একটি বই প্রকাশিত হয়েছে।