এই সকালেও তিওরবিলার বাজারে রাসুর দোকানে টিভি চলছে। চারদিকে ঝিরঝিরি হাওয়া বইছে। দোকান ঘেঁষে পাকা করে বাঁধানো বটগাছটা ঝুরি নুয়ে মাটি ছুঁইছুঁই করছে, আর রাস্তার দুপাশ ধরে দাঁড়িয়ে আছে নাম-না-জানা প্রাচীন বৃক্ষ যারা অনেক ইতিহাস রক্তপাতের সাক্ষী। দুই রাস্তা এসে ত্রিভুজের কোণের মত মিশেছে একখানে। কোনাটার মুখেই বাঁধানো ঝুরি বটটা আর তার কিছুটা সামনে রাসুর দোকান। দোকানের ঐ ছোট্ট টং থেকে বাক্সটা বাইরে বের করে দিতে হয়েছে রাসুকে। বটতলা পর্যন্ত আজ নীল পলিথিন পেতে দেওয়া হয়েছে। এইখানে বসে খেলা দেখে মানুষ। এরা এই গ্রামের মানুষ, সকলের পরনেই মলিন পোশাক। পোশাক যাই হোক একটা গামছা সবার কাঁধে, পান খাওয়া দাঁত আর খেলা দেখবার সময় মুখে হাসি অথবা উত্তেজনার রেখা। কেউ কেউ উত্তেজনায় বেশিই চিৎকার চেঁচামেচি করে, নিজ দলের প্লেয়ারের ফাউল মেনে নিতে পারে না, বিপক্ষ দলকে গালমন্দ করে। কেউ কেউ রেফারির সাথে অমত করে, কেন পেনাল্টির সুযোগ দেওয়া হল না তাদের দলকে- এই নিয়ে। কেউ কেউ আবার বলে- 'দূর মিয়া খেলার ঘোড়ার আন্ডাটা বোঝো তুমি'। এই নিয়ে তর্ক বিতর্ক বাড়াবাড়ি রকম পৌঁছে যখন বাড়ি থেকে আন্ডা দিয়ে খেয়ে আসা গরম ভাতও ঘণ্টার মধ্যে হজম হয়ে যায় তখন রাসর চা-ই ভরসা।
জান্নাতুন নাহার তন্দ্রা, পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিষয় - তড়িৎ ও কম্পিউটার প্রকৌশল। বর্তমানে প্রভাষক হিসেবে নিযুক্ত আছেন নিউ জার্সির রোয়ান ইউনিভার্সিটিতে। জন্ম ১০ মার্চ ১৯৮৭ চুয়াডাঙ্গাতে, সেখানেই স্কুল জীবন ও বেড়ে ওঠা। পরবর্তী শিক্ষা জীবন- হলিক্রস কলেজ ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। কর্মজীবন শুরু হয় প্রকৌশলী হিসেবে নেটওয়ার্কিং কোম্পানিতে যোগদান ও পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে। এরপর মাস্টার্সের জন্য আগমন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটায়। পিএইচডি করেছেন নর্থ ক্যারোলিনা এ এন্ড টি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে। লেখিকা বিচ্ছিন্নভাবে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ২০১৫ সালে প্রথম প্রকাশিত বই ‘প্রবাসে’ যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যয়নকালীন সময় নিয়ে লেখা। ২০২৩ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস -এখানে অরুণোদয়।