অবিভক্ত ভারতবর্ষে রেলের আসাম মেইল, দার্জিলিং মেইল, ঢাকা মেইল, শিলিগুড়ি এক্সপ্রেসের কথা মনে আছে? গোয়ালন্দ হতেই সেকালে এই ট্রেনগুলো চলত। সেই সোনালী দিনের ভ্রমণের কথাই তুলে ধরা হয়েছে। কলকাতার লোকেরা ব্রিটিশ আমলে গোয়ালন্দ হতে প্যাডেল স্টিমারে ঢাকা যেত। স্টিমারের মনোমুগ্ধকর জার্নি, অসাধারণ স্বাদের খাবার আর পদ্মার রুপালি ইলিশ। গোয়ালন্দ হতে স্টিমার যেত যমুনা ব্রক্ষপুত্র হয়ে আসামের ডিব্রুগড়। এপার বাংলা আর ওপার বাংলার যোগাযোগের মেলবন্ধন ছিল গোয়ালন্দ। পর্তুগিজ ফিরিঙ্গি দস্যুদের অত্যাচারের নানা কাহিনী এ গোয়ালন্দেই। সীতারাম রাজার পুষ্করিণী, মেদিনীপুর ওরশ স্পেশাল ট্রেন, বাংলার বারো ভূঁইয়ার দুজনের শাসন, সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, চিত্রনায়িকা রোজিনা, কাঙ্গালিনী সুফিয়া, চিত্রশিল্পী মনসুর উল করিমসহ অসংখ্য গুণীজন ও ঐতিহাসিক স্থাপনার কথা আছে বইয়ে। রামদিয়ার মটকা, ক্ষীর চমচম, হড়াই নদীতে মনসা মঙ্গলের কাব্যের সপ্তডিঙ্গা ডুবির ঘটনা মনে করিয়ে দিবে বইটি। বাংলার প্রথম আত্মজীবনীকার রাসসুন্দরীর কথাও রয়েছে বইতে। এটা গল্প উপন্যাস নয়- বাংলার ইতিহাসের দর্পনের খণ্ডিতাংশ বলা যেতে পারে! পৌনে দুইশ বছর আগে পদ্মার স্টিমারের ছবি, ভাড়ার তালিকা গেজেটসহ দুর্লভ কিছু ছবি আছে। নদীয়া জেলার অধীন ছিল গোয়ালন্দ মহকুমা যা বিভিন্ন কালে যশোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর হয়ে আজকের রাজবাড়ী জেলা। এ জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য উৎসব, পার্বন, ভাষা-সংস্কৃতিসহ অনেক কিছু বইয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তরুণ প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন।