বইয়ের পাতা উল্টানোর মধ্য দিয়ে এক সময় মনে হলো বাংলা সাহিত্যেও অঙ্গনে বুদ্ধিবৃত্তিক লেখার সংখ্যানুপাত খুব বেশি নয়। কারন সাহিত্যের পরিধি সীমায় হৃদয়বৃত্তিক লেখার যেমন প্রয়োজন তেমনি বুদ্ধিবৃত্তিক লেখারও প্রয়োজন অনস্বীকার্য। নইলে সাহিত্য আনন্দ অভিলাষের উপলক্ষ্যে পরিণত হবে। মন ও মননে এ সত্য উপলদ্ধি করলেও এটা জানি এ শূণ্যতা পূরণের নূন্যতম সামর্থ আমার নেই। তারপরও ভেতরে একটা অদৃশ্য তাগিদ অনুভব করতাম সব সময়। কিন্তু ব্যক্তিক ব্যস্ততার মাঝে এ তাগিদ নিজের অজান্তেই নিজের মাঝে অবদমিত হয়ে যেতো। কোভিড-১৯ এর একটানা ছুটিতে অনেক দিনের সেই সুপ্ত ইচ্ছা অদম্য হয়ে উঠলো। এতোদিন যে ভাবনাগুলো নিজের ভেতরে একা একা কথা বলতো এবার সেগুলোকে কলমের জলে ঢালতে শুরু করলাম। শুরুতে মনে হতো, কি লিখছি (?), কেমন লিখছি (?), কিছু হচ্ছে কি হচ্ছে না (?), কেউ পড়বে কি পড়বে না (?), ইত্যাকার অনেক কথা। তারপরও অবচেতন মনের কোন একটা শক্ত অংশ সাহস যোগাতে শুরু করলো। কলমে জোর পেতে থাকলাম। এক সময় মনে হলো; অনেক চেষ্টাতে যেখানে কিছুই হয় না সেখানেও কিছু একটা হয়ে যায়। কারণ, সর্বোত সফলতার সংজ্ঞায় আমার লেখা সমৃদ্ধ না হোক; আমার অর্জন, আমার ধারণা, আমার বিশ্বাসকে তো আমি অক্ষরের বুননে বপন করতে পারলাম - এক জীবনে এটুকুই কম কিসে (?) হয়তো এ ধারার ধারাবাহিকতায় আরো অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে অজানা ভবিষ্যতে। কারণ আশায় বুক বেঁধে নিরাশার মহাসাগর পাড়ি দিয়েইতো মানুষ আবিষ্কার করেছে অনিন্দ্য মহাদেশের। এ প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনায় সূচনা উৎসাহ জুগিয়েছে বন্ধুবর কবি জেবুননেসা হেলেন। এ ঋণ শোধাবার নয়। প্রতিটি প্রবন্ধ লেখার মাঝে বা শেষে তা পড়ে শুনিয়েছি আমার একমাত্র সন্তান সেলমিয়া আল মালাহা তটিনীকে। শব্দ চয়নে, ভাষা ব্যবহারে বা বিষয় উপস্থাপনে সে তার মতো করে আমাকে শুধরে দিয়েছে। এ প্রেরণা এক অনবদ্য প্রেরণা। সবগুলো প্রবন্ধ পাঠ করে বিভিন্ন ত্রুটি সংশোধনে সহায়তা করেছে আমার প্রিয় ছাত্র ও বর্তমান সহকর্মী অধ্যাপক আবু ছাদেক সায়েম। তার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। ঋজু প্রকাশের কর্ণধার বন্ধুবর মাহমুদ বাবু বই প্রকাশের ব্যাপারে অকৃত্রিম সহযোগিতা করেছে। তাকে মনে রাখবো আজীবন। শ্রদ্ধেয় মুহাম্মাদ আমিন আকবরী ভাইয়ের সর্বোত সহযোগিতায় সময়ের সপ্ন বাস্তবে রূপ পেয়েছে। তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ। সর্বোপরি পরম করুণাময়ের দরবারে অন্তরের গভীর থেকে উচ্চারণ করছি - “শোকর আলহামদুলিল্লাহ”