১৯২১ সালে পূর্ব বঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠা হয়নি ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত । ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পূর্ব বঙ্গের যে সীমানা নির্ধারণ হয়, সেই সীমানার মধ্যে উত্তরবঙ্গ পড়ে রাজশাহী বিভাগে । বিশাল সীমানা দুইটি বড় নদী পদ্মা ও যমুনা দ্বারা পূর্ব বঙ্গের রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পর থেকেই পূর্ব বঙ্গের রাজধানী ঢাকাতে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন প্রকট আকার ধারণ করে । আর এই আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়। ব্রিটিশ ভারতে বাংলার প্রধান শিক্ষার অফিস ছিল রাজশাহীতে। ১৮৭৩ সালে রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, তারপর থেকেই সারা বাংলার শিক্ষার মানের দিক থেকে কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের পরের স্থান দখল করে রাজশাহী কলেজে। সারা বাংলা থেকে রাজশাহী কলেজের পড়াশোনা করার জন্য ছাত্র ছাত্রীরা আসতো । ৫২-এর ভাষা আন্দোলনের পর পুর্ব বঙ্গের মানুষ যখন অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠলো । তখন পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার, ব্রিটিশ সরকারের 'ডিভাইড এন্ড রুল' বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করতে লাগলো । ভাগ করো এবং শাসন করো । এমনটা কথা উঠছিল, পূর্ব বঙ্গ কে একটি আলাদা প্রদেশ করার ব্যাপারে। যাতে ঢাকার শক্তি দূর্বল হয়ে পড়ে। পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন স্থিমিত হয়ে পড়ে। তখন সারা পূর্ব বঙ্গে একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সারা পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতো, সারা বাংলার আর্থিক অবস্থা নিয়ে তাদের মতবিনিময় হতো। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীরা ছিলেন পূর্ব বাংলার ভূস্বামী কিংবা সরকারি উচ্চ প্রদস্থ কর্মকর্তাদের সন্তান। ৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বাংলার কৃষকের সন্তানেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাই, তাদের সম্মুখে খোলসা হয়ে পড়ে পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর শাসন ও নিষ্পেষণ ।
Title
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও তৎকালীন সময়ের রাজনীতি (১৯৫৩-১৯৭১)
মাসুদ রানা ৫ নভেম্বর ১৯৭৬ সালে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার কালিকাতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ রওশন আলী ও মাতা জামেলা বেগম। তিনি বাঁশগ্রাম হাইস্কুল। থেকে মাধ্যমিক, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। একাধারে তিনি কবি, গবেষক ও প্রাবন্ধিক। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ : • কালিগঙ্গার বাঁকে বাঁকে, আত্মা রক্তাক্ত হয়। প্রতিদিন (কাব্যগ্রন্থ)। • আমারে কবর দিও কালিগঙ্গার বাঁকে (কাব্যগ্রন্থ) • শালঘরমধুয়ার নীলকুঠি (কাব্যনাট্য) • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রজীবন ও ছাত্র-রাজনীতি (গবেষণাগ্রন্থ)। • গুরু-শিষ্য ভাসানী বঙ্গবন্ধু (গবেষণাগ্রন্থ) • মুক্তিযুদ্ধ থানা কমান্ডারের অসমাপ্ত জবানবন্দি (গবেষণাগ্রন্থ) • বঙ্গবন্ধু যখন যুক্তফ্রন্টের কৃষি ও সমবায় মন্ত্রী (গবেষণাগ্রন্থ) • প্রাদেশিক সরকারে বঙ্গবন্ধু যখন দুর্নীতি দমন মন্ত্রী (গবেষণাগ্রন্থ) • আমাদের জাতীয় সংগীত : বঙ্গবন্ধুর রবীন্দ্রপ্রীতি (গবেষণাগ্রন্থ) • বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাম বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা (গবেষণাগ্রন্থ) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও দার্শনিক ভিসি ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ-এর সময়কাল ১৯৫৭-১৯৬৫ (গবেষণাগ্রন্থ)। • মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও বর্তমান বাংলাদেশ (প্রবন্ধগ্রন্থ) • আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু (গবেষণাগ্রন্থ) তিনি বগুড়া পাঠচক্রের প্রধান সমন্বয়কারী ।