প্রতিটি লেখার স্বাতন্ত্য বৈশিষ্ট্য আছে। সেই বৈশিষ্ট্য অনুসারে প্রতিটি লেখা কথা বলে। লেখা কখনো কবিতা, কখনো গান, কখনো গল্প, কখনো উপন্যাস হয়ে উঠে। আর যিনি লেখাকে বিভিন্ন মাধম্যে ফুটিয়ে তুলেন তিনিই হলেন লেখক। লেখক তাঁর আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে রচনা করেন একেকটি লেখা। সেইসব লেখা হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত বলে মানুষের কথা, দেশপ্রেমের কথা, এখানেই যেন লেখকের লেখার লেখার স্বার্থকতা। এমনই সব স্বার্থক লেখার পসরা সাজিয়েছেন কবি, গল্পকার ও সাহিত্য সংগঠক কে এম সফর আলী। মায়ের চোখে ১৯৭১ এটি কোনো কবিতার বই নয়, গল্পের বই নয়, উপন্যাসও নয়। আবার গল্প, উপন্যাস, কবিতা সব কিছুরই একটি মেল বন্ধন হলো মায়ের চোখে ১৯৭১। লেখাচিত্র মূলভাব ও গাম্ভীর্যতা রয়েছে। লেখকের কলমে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক নানা প্রসঙ্গ, বিদ্রোহ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। এই বইটির সব চেয়ে বড় বিষয় হলো বইটি একটি তথ্য নির্ভর বই। গল্প পড়ার ফাঁকে ফাঁকে লেখক অদ্ভুদ ভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত বিবরণ, মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গণহত্যার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, ঐতিহাসিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব প্রাপ্ত তালিকা এই বইটিতে যুক্ত করেছেন। যার কারণে বইটি একটি তথ্য নির্ভর বই প্রয়োজনীয় বই হয়ে উঠেছে। লেখক প্রবাস জীবনে থেকেও এত সুন্দর করে নিজ গ্রাম, নিজ গ্রামের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করেন এটা খুব ভালো বিষয়। তার চেয়ে আরো ভালো বিষয় হলো মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গণহত্যার নিয়ে লেখক যে সকল তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং তা বই আকারে প্রকাশ করে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন নিসন্ধেহে এটি একটি প্রশংসনীয় কাজ। তাঁর কাব্যজীবন আরও সাফল্যন্ডিত হোক।