শিশুসাহি সাজেদুল করিমের জন্য ১৯১৫ সালের এপ্রিল কুমিল্লা জেলার ফাল্গুনকরা গ্রামে। ফেনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৩৬ সালে তিনি গণিতে লেটারসহ ম্যাট্রিকে প্রা বিভাগে পাস করেন। ১৯৩৫ সালে তিনি ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই এ পাস করেন। ১৯৩৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স এবং ১৯৪০ সালে এম এ পাস করেন। স্কুলজীবনে সাজেদুল করিম নিজেই ক্লাসবন্ধু সুধীন্দ্রনাথ দাসকে নিয়ে 'মুকুল' নামের একটা হাতের লেখা পত্রিকা 'ফোর' থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত মাস মাস নিয়মিত সম্পাদনা করতেন। বলা যায় 'মুকুল' পত্রিকাতেই শিশুসাহিত্য রচনায় সাজেদুল করিমের হাতেখড়ি। শিশুসাহিত্যে তাঁর প্রকাশিত ছ'টি গ্রন্থ চিংড়ি ফড়িং-এর জন্মদিনে, দস্যি ছেলের দশচক্রে, চেরাপুঞ্জী পলিটিক্স, এপ্রিলস্য প্রথম দিবসে, মাসিপিসির অ্যালজেব্রা এবং টুং পাহাড়ে সূর্যোদয়। এদের প্রত্যেকটি আকর্ষণীয় হাস্যরসে ভরপুর, যা বয়ষ্কদেরও আনন্দরস পরিবেশন করে। শিশুসাহিত্যে মূল্যবান অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাজেদুল করিম ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। পেশাজীবনে সাজেদুল করিম ছিলেন তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান । শিশুসাহিত্যে থাকতে হয় মননশীলতার খোরাক, সৃজনশক্তি বাড়ানোর উপাদান এবং জীবনকে স্বপ্নময় ও আনন্দময় করার অবিরাম আকাঙ্ক্ষা। সাজেদুল করিম তাঁর গল্পে সন্নিবেশন করেছেন প্রাণোচ্ছল সব রসাত্মক চিত্রপট। পরিবেশন করেছেন আনন্দময় শৈশবের স্বপ্ন, যা শিশুদের আন্দোলিত করে কালে কালে। শিশু-কিশোরদের মানসিকতা বিকাশে সাজেদুল করিমের গল্প এক অনবদ্য সৃষ্টি। শিশুসাহিত্যিক সাজেদুল করিম ১৯৯৪ সালে ৯ ডিসেম্বর তিনি ঢাকার টিকাটুলিস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।