গ্রামের নাম কুসুম তৈড়। গ্রাম খুব বড় নয়। ছোট বড় কয়েকটি পাড়া আর কিছু ছড়ানো ছিটানো বাড়ি নিয়ে এই গ্রাম। এই গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ সত্যিই মনোরম। মন-প্রাণ জুড়িয়ে যায়। গ্রীষ্মে গাছে গাছে নানা রকম ফল। আম, জাম, কাঠাল, লিচু আরও কত কী। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপে গ্রামের মানুষ গাছের নিচে শুয়ে বিশ্রাম নেয়। গাছের শীতল ছায়া, দক্ষিণা বাতাসে মুহূর্তেই ঘুম চলে আসে। এক এক ঋতুতে এক এক রূপে সাজে এই গ্রাম। এই গ্রামে ছেলেদের একটি দল আছে। আর দলনেতা হলো বসু। দলের ছেলেদের মধ্যে বসু, ঝন্টু, কালু, মধু, লেবু, কান্ত, রবি, বেনু ও পচু। আরও আছে- ফরিদ, কেটু, টেপুয়া, আনু। এদের মধ্যে ফরিদের বাড়ি একটু দূরে হওয়ায়, সে সবসময় এদের সাথে থাকতে পারে না। তবে বিকালবেলা খেলার সময় সে থাকে। কেটু, আনু, টেপুয়া- এরা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। যাকে বলে বছরমারি কামাইল। এদের বাড়ি এখানে না। এদের বাড়ি আলাদা আলাদা জায়গায়। টেপুয়া ঝন্টুদের বাড়িতে কাজ করে। কেটুও করে ঝন্টুদের বাড়িতে আর আনু করে মধুদের বাড়িতে। বসুদের দলের কাজ স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলা করা আর দুষ্টুমি করা। তবে বসু দুষ্টুমি করলেও ছাত্র হিসেবে বেশ ভালো। আর দুষ্টুমি করলেও, কারও বড় ক্ষতি হয় এমন দুষ্টুমি করে না। তারা যে স্কুলে পড়ে, সে স্কুলের নাম সন্কা দি¦-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়। পাশেই সন্কা হাট। আশপাশে কয়েক গ্রামে এটাই একমাত্র স্কুল আর সন্কা হাটই একমাত্র হাট। বসুদের পাড়ার দক্ষিণ পাশে আছে একটি বটগাছ। দিনের বেলা খেলা চলে এই বটগাছের নিচে। দাঁড়িয়াবান্ধার দাগ দেওয়া আছে। সে অনেক দিন আগের দাগ দেওয়া। প্রতিদিন খেলতে খেলতে এমন হয়েছে যে, আর নতুন করে দাগ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আবার বটগাছেও খেলা চলে। এই বটগাছে বসু এক ডাল থেকে আরেক ডালে অনায়াসে যেতে পারে। এই বটতলা তাদের দলের সবচেয়ে প্রিয় স্থান।