হাসান সুজনের 'অনুভবে অন্তহীন' কাব্যগ্রন্থের বেশিরভাগ কবিতাই আমার পড়া। তরুণ প্রজন্মের কবিদের মধ্যে সুজনের কবিতার যে সরলতা আর সাবলীলতা তা আমাকে মুগ্ধ করে। তাঁর লেখাতে প্রেম বা বিরহের কবিতা, দেশের বা মায়ের কবিতা, প্রতিবাদ কিংবা ক্ষোভ এত সহজ সরল ভাষায় ফুটে উঠে, যা তাকে দিনদিন পাঠকপ্রিয়তা এনে দিচ্ছে। প্রথম লাইন থেকেই তাঁর কবিতা পাঠককে ঘটনার ভেতরে নিয়ে যেতে বাধ্য। সে যা বলে সোজাসুজি বলে, সে যা বিশ্বাস করে অকপটে তাঁর লেখাতে প্রকাশ করে। বর্তমান অপসংস্কৃতি এবং বিদেশি সংস্কৃতির তোড়ে আমাদের শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কবিতা, গান, সিনেমা যখন হুমকির মুখে, সেখানে সুজনের কবিতা মানুষকে কবিতার প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে সাহায্য করবে। তাঁর কবিতা আমার কাছে মাটির মতো, মায়ের স্নেহের মতো। তাঁর এই কাব্যচর্চা মানুষকে কবিতা পড়তে আগ্রহী করে তুলবে। তরুণ প্রজন্ম যখন অর্থ আর মাদক, খ্যাতি আর বিত্তের শেকলে বন্দি হতে থাকে, তখন সুজনের নীরব কাব্য সাধনা আমাদের আশাবাদী করে তোলে। আশাকরি সুজনের 'অনুভবে অন্তহীন' কাব্যগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে পাঠক ভিন্নতর এক মাধুর্যের সন্ধান পাবেন। যে মাধুর্যের সন্ধানই মানুষকে সৃষ্টিশীল করে তোলে। সুজনের এই কাব্যচর্চা অব্যাহত থাকুক, তাঁর হাত দিয়ে বের হয়ে আসুক আমাদের অতীত এবং অনাগত শব্দাবলি, যা প্রকাশে সে হবে নিঃসংকোচ।