"বিকেল তো প্রতিদিন আসে কিন্তু এমন নীলপরীকে প্রতিদিন পাবো না। " রেখা ও রোমানের রোমাঞ্চকর দিন গুলোর মধ্যে অসামঞ্জস্য কিছু ঘটনা ঘটে যায়। যা মেলানো যায় না। পুরাণ চাচা, কুকুরের লালাভরা জিভ, রোমানের উন্মাতাল প্রেমে স্পর্শরত অবস্থায় আবার রোমানেরই কলিং বেল টিপে আর্বিভাব ! সত্যি ভাবিয়ে তোলে পাঠককে। টান টান উত্তেজনা বিরাজমান 'গোপন স্পর্শ' গল্পটিতে । আবার ওদিকে, দীপ্তির চোখ বেয়ে দু-ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছে। অদ্ভুত একটা টান অনুভব করছে অনন্তের প্রতি। ভাবছে দূর পাহাড়ের চূড়ায় এক বিকেলে মেঘেদের ভিড়ে ভিজছে সে, হলুদ রঙের শাড়ি পরে। পাহাড়ের সাথে কথা বলছে চিৎকার করে। হঠাৎ শুনলো সে, " পাহাড়ের সাথে কথা বলছো দীপ্তি ? আমার তো পাহাড়কেই হিংসে হচ্ছে ।" " দ্বিতীয় বিয়ে " গল্পটি পড়তে পড়তে মনে হলো, ভালোবাসা গণতন্ত্রে নয় একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাসী। সময় বড়ই নিষ্ঠুর। সময়ের আঁচড়ে ক্ষত-বিক্ষত সুপ্তি ও প্রদীপের জীবন।সুপ্তি সংসারকে ভালোবেসে অন্য কিছুকেও মননে এঁকেছিলো। সেই ভালোবাসায়ও ন্যায় আছে। আছে যুক্তি। তবুও সুপ্তি জবাবদিহির কাঠগড়ার দিকেই ধাবিত হয়। তাদের নতুন জীবনের রঙিন গোধূলির গল্পটা পাঁচমাসেই কী ফিকে হবে? ভালোবাসার রঙিন আঁচল কি রঙ হারাবে ? ঝরে পড়া ভূলুণ্ঠিত কৃষ্ণচূড়ার মতো ! রেখা, রোমান, দীপ্তি, অনন্ত, সুপ্তি, প্রদীপ এই সব চরিত্র গুলোর মতো আরও কিছু চরিত্র সুনিপুণ ভাবে সৃষ্টি করেছেন গল্পকার নাদিরা ইসলাম নাইস। তার প্রথম গল্পগ্রন্থে গল্পের বিষয়বস্তু উপস্থাপন, দৃশ্যপট আল্পনা এবং সামাজিক ঘটনা প্রবাহের সুন্দর চিত্র প্রস্ফুটিত হয়েছে তাঁর অনুধাবনের অনুভবময় লেখনশৈলীতে। তার সৃষ্ট চরিত্র গুলোর নিয়তিকল্প বা গল্পগুলো গভীরতা সম্পর্কে জানতে হলে পড়তে হবে "মেঘ চোখ" গল্পগ্রন্থটি।
নাদিরা ইসলাম নাইস জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৯৮৭, দিনাজপুর ছােটবেলা থেকেই লুকিয়ে-ছাপিয়ে লেখালেখির ছিল তীব্র আকর্ষণ। ২০০২ সালে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. পাশ করেন। দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০১৪ সালে এম.এ. সম্পন্ন করেন। এইচ.এস.সি. পড়াকালীন সময়ে পরিবারের সম্মতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে দুই পুত্র সন্তানের জননী।। ছােটবেলা থেকেই লেখালেখি, বই পড়া এবং সংগীত চর্চার সাথে যুক্ত। বিভিন্ন সময়ে। সংগীত প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ বেতারের একজন আধুনিক সঙ্গীত শিল্পী। তিনি মনে করেন ‘লেখা মানেই শেখা। পছন্দ করেন জীবনের জয়গান এবং প্রেমের কবিতা লিখতে। এখন লেখালেখিই তার সবচেয়ে বড় শখ এবং নেশা।