ভেনিসের অন্যতম বিলাসবহুল হোটেল- সেইন্ট রেজিসের চতুর্থ তলার ব্যালকনিতে একটা লাউঞ্জ চেয়ারে আধশোয়া অবস্থায় লি চাইল্ডের ‘নাথিং টু লুজ’ বইটি পড়ছিল শাহেদ। পাশের সাইড টেবিলে একটা বিফইটার জিনের বোতল, কয়েকটা টনিকের ক্যান, বরফের একটা পাত্র আর একটা গ্লাসে অর্ধেক পরিমাণ টনিক মিশ্রিত জিন। ইটালির বসন্ত হলেও তাপমাত্রা এখনো দশ-বারো ডিগ্রি। তাই বেলা এগারোটার রোদটা বেশ উপভোগ করছে সে। বইটার বেশ জমজমাট একটা জায়গায় এসেছে, এমন সময় ফোনটা এলো। “আজ সন্ধ্যা সাতটায়। আপনার হোটেলের বোট-পার্কে একটা ধূসর রঙের মোটরবোট অপেক্ষা করবে, গায়ে লেখা থাকবে ‘ট্রেক্সন’। আপনি আজ রাত নয়টার এয়ার ফ্রান্সের ফ্লাইটে প্যারিস যাচ্ছেন। আশা করি দেখা হবে। একটু থেমে সে আরও যোগ করল, ‘প্যারিস, এয়ার ফ্রান্স,” বলেই লাইনটা সে কেটে দিল। ফোনটা টেবিলে নামিয়ে রেখে কিছুক্ষণ ওখানেই ঝিম মেরে দাঁড়িয়ে রইল শাহেদ। তারপর ধীরপায়ে ব্যালকনিতে ফিরে গ্লাস ভরে একটা জিন ও টনিকের মিশ্রণ বানিয়ে লম্বা একটা চুমুক দিয়ে গ্লাসটা হাতে নিয়েই সে লাউঞ্জ চেয়ারটাতে এলিয়ে বসে আকাশের দিকে তাকাল। নীল আকাশে শুভ্র মেঘের মাঝে অনেক ওপরে একটা ঈগল এক জায়গাতেই অলসভাবে চক্কর মারছে, যেন উড়াতেই তার আনন্দ! কিন্তু একমাইল উপর থেকেও সে তার শিকারকে শনাক্ত করে এক ডাইভে এসে সেটাকে ধরতে পারে। শাহেদের মনে হলো, ঈগলটা যেন সেই রহস্যময় লোকটা, আর সে নিজেই শিকার- কোনো না কোনো জায়গায় বসে লোকটা প্রতিটি পদক্ষেপ, তার সকল কার্যকলাপের উপর নজর রাখছে!
"মনের আনন্দের জন্যই লেখালেখি করি। ২০০১ সাল থেকে লেখালেখি করলেও ২০০৯ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর থেকে লেখালেখিতে বেশ নিয়মিত হয়েছি। সেনাবাহিনীতে চাকুরির সুবাদে যেমন দেশের প্রায় সব জায়গায়ই ঘুরেছি, বিদেশেরও ত্রিশটি দেশে ঘুরেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও জাতিসংঘের অভিজ্ঞতা ছাড়াও দেশে বিদেশে নানা রকম মানুষের সংস্পর্শে এসেছি, নানা ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি, সেসব অভিজ্ঞতা ও মানুষের কথাই আমার গল্প উপন্যাসে আপনাতেই চলে আসে! ছোটগল্প, উপন্যাস ছাড়াও অনুবাদ করতে পছন্দ করি। এযাবৎ আমার ১৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে ৩টি উপন্যাস, ২টি ছোটগল্প সংকলন, ১টি মুক্তিযুদ্ধের উপর গল্প সংকলন, ১টি জাতিসংঘের অভিজ্ঞতার উপরে লেখা নন-ফিকশন, ২টি শিশুতোষ মজার ভূতের উপন্যাস, ৪টি অনুবাদ ও ২টি যৌথ গল্প সংকলন রয়েছে। এবারের (২০১৯) বইমেলায় আমার ৩টি বই (১টি ভ্রমণকাহিনী, ১টি জীবনধর্মী গল্প সংকলন ও ১টি শিশুতোষ গল্পের অনুবাদ) প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। লেখালেখির পাশাপাশি ""নহলী"" নামে আমি একটি সংগঠন গড়ে তুলেছি, যেটার প্রকাশনীর মাধ্যমে নবীন লেখকদের বই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছাপিয়ে থাকি এবং একটি মোটামুটি বড় লাইব্রেরি গড়ে তুলেছি যেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারেন। লাইব্রেরিটিতে এখন প্রায় চার হাজার বই থাকলেও শীঘ্রই এতে দশ হাজার বই যোগ হবে এবং অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপভিত্তিক একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশের যে কেউ আমাদের কুরিয়ার খরচে বই নিয়ে পড়তে পারবেন। "