কবির কথা সমাজ ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কি মৃত্যু হয়েছে? সমাজের বড় একটা সামাজিক স্তর জুড়ে থাকার কথা ছিলো ছাত্রদের। সেই জায়গা থেকে আজ তারা বিলুপ্ত প্রায়। হিংসা, প্রতিহিংসার রাজনীতি করে, আলাদা আলাদা মনোভাব পোষণ করেন। শেষ পৃষ্ঠার প্রবন্ধেও ঠাঁই মিলছেনা তাদের চিন্তার। দিন যত যাচ্ছে, সময় ও পরিস্থিতি ততটাই বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে। দেশ, মাটি ও মানুষের পবিত্র সপর্শ থেকে অচিরেই অর্জন করেছে ধুলোর প্রসাধ। এমন কি হবার কথা ছিলো স্বাধীন এই দেশের? যেই দেশে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিদের জন্ম। আমি সেই কিংবদন্তিদের ত্যাগ দেখে পুলকিত হই তবুও কেমন করে নিশ্চুপ রই। ছাত্র শুধুই এখন নাম মাত্র একটা সংখ্যা। যেখানে নেই ঘুম থেকে ওঠে পড়াশোনা করার তাড়া নেই কোনো স্কুল কলেজ ভার্সিটিতে যাওয়ার পর্যাপ্ত তাগিদ। সাত আট বছরের ছেলে মেয়েদের হাতে দিতে হচ্ছে বাধ্য হয়েই মোবাইল ফোন। গেমস খেলতে কিংবা কার্টুন দেখতে দেখতেই প্রভাত পেরিয়ে দিনের সিংহভাগ সময় ফুরায়। এখন পারিবারিক শিক্ষার অবনতির আশঙ্কাও রয়েছে। একটা সময় ভোরের কুয়াশা মাখা মুগ্ধতা আর মৃদু রোদ্দুর পরতো পড়ার টেবিল জুড়ে। এখন টেবিলে পরে থাকে, দামী ঘড়ি দামি মোবাইল ফোন দামি প্রসাধনীর বক্স। অথবা দামি গাড়ির চাবি। স্বাধীন দেশের মানুষ এখন সকল স্বাধীনতা খুঁজতে খুঁজতে অধিকাংশ মানুষ আধিপত্য বিস্তার করে চলেছেন, দেশের মানচিত্রে অশ্লীল শব্দোচ্চারণের কিংবা অশ্লীল আচরণের রঙ মেশাতে। এই সুন্দর পৃথিবী আমাদের তার বুকের ভেতরে লুকিয়ে রেখেছে। যেনো কেউ আমাদের এতোটুকুও আচ করতে না পারে। অথচ এই পৃথিবী থেকে রুপান্তরিত হয়ে ওঠা, একটা জাতি, একটা গোষ্ঠী, একটা সমাজ আমাদেরকে অসহায় করে রেখেছে অনির্দিষ্ট কালের জন্য। যেখানে সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে শুধুই কলমের আর কাগজের স¤পর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মানুষ এখন বিশ্বাস আর ভরসা কি জিনিস, তা অনেকটা ভুলেই গেছে। কিছু কাল্পনিক ভরসার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার নেশায় বিভোর। জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে এক-একটা অবাস্তব সমীকরণ এসে হাজির হয়, যা মানুষ-মানুষকে জোর পূর্বক ভাবে চাপিয়ে দেওয়াই যেনো তাদের নিত্যদিনের কর্তব্যর মধ্যে একটা। হিংসা, প্রতিহিংসা, আর ঘৃনার ব্যস্ততায়, মানুষের পবিত্র ভালোবাসা আবেগ সমীহ এখন অসহায় এক প্রাণ। মানুষ সামাজিক জীব আর সমাজ তাদের নিয়েই গঠিত হয়। মানুষ একা একা বসবাস করতে পারেনা বলেই সবাই মিলে মিশে থাকার প্রয়োজন বোধ করে। সুতরাং আলোচনা সমালোচনা যাই হোক তবুও সবাইকে নিয়ে বসবার করার প্রাপ্তিই হচ্ছে জীবন। আশ্চর্য ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পৃথিবীর কাছে আমরা কতোই না ঋনী, তার ভেতরে ঢুকে ক্ষত বিক্ষত করে বেরিয়ে আসি-তবুও তো সেও নিঃশ্ব। অবাস্তব ও কাল্পনিক মস্তিষ্ক ধোলাইয়ের গাঢ় চিন্তা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা না হবে, ততক্ষন কিংবা ততকাল আমরা আমাদের সমাজকে দায়বদ্ধতার হাত থেকে বাচাতে পারবোনা।! তো সেও নিঃশ্ব। অবাস্তব ও কাল্পনিক মস্তিষ্ক ধোলাইয়ের গাঢ় চিন্তা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা না হবে, ততক্ষন কিংবা ততকাল আমরা আমাদের সমাজকে দায়বদ্ধতার হাত থেকে বাচাতে পারবোনা।!