কখনো কি খেয়াল করেছেন, ঢাকাই চলচ্চিত্র আমাদের কাছে যতটা না দেখার, তারচেয়েও বেশি যেন সমালোচনার বিষয়। এমনকি, যে চলচ্চিত্রটা আমরা দেখি নাই পর্যন্ত, অনেক সময় তারও দোষত্রুটি নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হই। বাণিজ্য আমাদের চলচ্চিত্রকে শেষ করে দিল, শিল্পের চর্চা থাকলে এমনটা কখনোই হতো না, এই বিশ্বাসটা সচেতন সমাজে অহরহ ঘুরপাক খেলেও চলচ্চিত্রে শিল্পের ভূমিকাটা ঠিক কী বা কতটুকু অথবা আদতে শিল্প বিষয়টাইবা কী, তার স্পষ্ট ধারণা খুব কম মানুষের মাঝেই দেখা যায়। তবে ঢাকাই চলচ্চিত্র যে শুধু শিল্প ও বাণিজ্যের দ্বন্দ্বেই নিষ্পেষিত, তা কিন্তু না। বরং এ নিয়ে আরও অনেক পরস্পরবিরোধী মানসিকতা আমাদের মাঝে বিদ্যমান। যেমন, ভারতীয় চলচ্চিত্রের আইটেম সংকে যারা তৃপ্তি নিয়ে উপভোগ করেন, তারাই আবার ঢাকাই চলচ্চিত্রে আইটেম সংয়ের উপস্থিতিতে সমাজ-সংস্কৃতির পাহারাদারে পরিণত হন। যে তরুণটা বিশ্বাস করে, চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্যেই তার জন্ম, সেই তরুণকেই আবার চলচ্চিত্রের প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত নিয়মকানুনকে নিদারুণ ভাবে অগ্রাহ্য করতে দেখা যায়। যারা আমাদের সরকার চলচ্চিত্র বান্ধব না কেন, সেই প্রশ্নে স্বোচ্চার, তারাই আবার বিগত কয়েক দশকেও ঢাকাই চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সরকারকে লাগসই কোনো রোডম্যাপ দিতে চরম ভাবে ব্যর্থ। গবেষনাধর্মী এই বইয়ে সহজ ভাষায়, অনেকটা আড্ডার ঢংয়ে আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গণের এইসব সংকটকে বিশ্লেষণ ও তার থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।