“জমাট কাহিনি নয়, গ্রন্থনার প্রচলিত ছাঁচ ভেঙে মনোজাগতিক টানাপোড়েনের বিচিত্রমুখী প্রতিবেদন তৈরিতেই বর্ণালী সাহার ঝোঁক। তাঁর গল্পে রয়েছে এক ধরনের অবিন্যস্ত, কোথাও কিছুটা পরিকল্পিত অরাজক বয়ান, সেই সঙ্গে এক অকৃত্রিম প্রাণসঞ্চারি মায়া। মানুষের চিন্তার শৃঙ্খলহীন বহুগামিতার প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধিৎসা, আর এরই ফলে গল্পের কাঠামোয়, চরিত্রদের পারস্পরিক লেনদেনে ফুটে ওঠে চেতন-অবচেতনের এক বহুস্বরিক মেলবন্ধন। এ এক স্বাতন্ত্র্যময় পাঠঅভিজ্ঞতা যা নিঃসন্দেহে তাঁর লেখনির অনন্য বিশিষ্টতাও। মূলত ব্যক্তিমানুষের আখ্যান হয়েও বর্ণালীর গল্প সমাজ, সংস্কৃতি ও নির্দিষ্ট ভূগোলের তাৎপর্যময় পাঠ।”-- ওয়াসি আহমেদ, কথাসাহিত্যিকমানুষকে তার ভিতর থেকে এবং বাইরে থেকে কী, কে এবং কেন প্রতিদিন অংশে-অংশে উদরস্থ করছে, ‘জবরখাকি’র আটটি গল্প পাঠককে সেই প্রশ্নের সামনে দাঁড় করাবে এবং একটা উদ্দীপক, অনুসন্ধানী যাত্রার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাবে। গল্পগুলির দুনিয়াতে আছে গণহিস্টিরিয়া, সন্ত্রাস, মারি, মাতৃত্ব, বন্ধুত্ব, অপত্য ও বৈকল্য। বর্ণালী সাহার গদ্য শক্তিশালী ভাষা, সাঙ্গীতিক পরিমিতি আর চিত্রকল্পে ঋদ্ধ। ভাষা, কল্পনা ও নন্দনের পথ দিয়ে কালের সাথে বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর রসদ রয়েছে এতে।
বর্ণালী সাহার জন্ম ১৯৮৩ সনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউট থেকে স্নাতক এবং মেলবোর্ন বিজনেস স্কুল (মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া) থেকে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেন। গদ্যভাষায় প্রভাব বিস্তার করে বাজার, সঙ্গীত, সংযোগ এবং প্রবাস। শৈশব থেকে রাগসঙ্গীতের চর্চা করছেন – শিক্ষার্থী এবং গবেষক হিসাবে কলকাতার আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ একাডেমির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ঢাকা, লন্ডন এবং মেলবোর্নে একাধিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বস্থানীয় পরামর্শক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে মেলবোর্নে বসবাস করছেন।