‘ঐ আকাশের তারায় তারায়’ রেবা নামের একটি মেয়ের জীবন কাহিনী। রেবার পাশাপাশি আরো যে চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তার নাম লিলি। উপন্যাসটির পুরোটা জুড়েই রেবা এবং লিলির গল্প। উপন্যাসের শুরু এবং বেশীর ভাগ অংশ বিধৃত হয়েছে রেবার জবানিতে। তবে গল্পটি শেষ করেছে লিলি। এই উপন্যাসের সময়কাল শুরু হয়েছে ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে। রেবা ও লিলির গল্প বলতে যেয়ে এখানে তিনটি সময়ের ব্যাপ্তিকাল দেখানো হয়েছে - মুক্তিযুদ্ধ এবং তার আগের ও পরের সময়। রেবার জীবন যেন একটি বহমান নদীর মতো যার উৎপত্তি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আগে তারপর বেশ কিছু দূর প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করেছে মুক্তিযুদ্ধের মত একটি উত্তাল সময়ে। মুক্তিযুদ্ধ পাড় হয়ে নদী বয়ে চলেছে স্বাধীনতা উত্তোর নতুন যুগে। জীবনের বাঁকে বাঁকে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সেই নদী যেয়ে মিশে গেছে ঐ নীল আকাশের তারায় তারায়। রেবা নামের এ নদীটির কোন অংশই শান্ত নয়। কখনো কখনো খরস্রোতা, ভীষণ উত্তাল। ঢেউহারা সেই উত্তাল নদীর অনেক শাখা প্রশাখার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শাখা নদীটির নাম লিলি। এই নদীটিও ছিল এক সময় চরম উত্তাল। সময়ের আবর্তে লিলি নামের এ নদীটি শান্ত এবং গভীর হয়ে বইতে থাকে মোহনার দিকে। বইটি পাঠকের মন ছুঁয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। রেবা এবং লিলির গল্প স্থান পাবে সকলের মনের মণিকোঠায়; কখনো নির্জনে মধুর অবসরে একটা দীর্ঘনিশ্বাস বা দুফোঁটা চোখের জল ফেলবে রেবার জন্য বা লিলির জন্য বা দুজনের জন্যই।
কাজী তাসমীন আরা আজমিরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭১ সালের ১৭ মে ফরিদপুর জেলার ঝিলটুলীতে তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ‘আমেনা মঞ্জিল’-এ। তাঁর শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে কুমার নদ বিধৌত ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ফরিদপুর শহরে। স্কুল এবং কলেজের গন্ডিপেরিয়ে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স এবং মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। মাস্টার্সের রেজাল্টের জন্য স্বর্ণপদকও পান। দ্বিতীয় মাস্টার্স অর্জন করেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিজ ডিপার্টমেন্টে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। প্রশাসনে থেকে দেশকে বেশি সেবা দেয়া যাবে এ ব্রত নিয়ে বিসিএস পরীক্ষা সম্পন্ন করে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সরকারের উচ্চতর পদে কর্মরত আছেন। স্কুলে পড়াকালীন সময় থেকেই তাঁর লেখালেখির শুরু। ‘সাদা পাঞ্জাবির একজন’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই। জীবনসঙ্গী ফোরকান বিন কাশেম একজন প্রকৌশলী। দুই সন্তান নুবায়রা ও নাফিস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে।