আমরা প্লেটোর প্রামাণ্য সাতাশটি সংলাপ এবং একটি চিঠিপত্রের সংকলন অনুবাদ করেছি এবং সেসব বই প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে যে, পাঠককে যদি প্লেটো সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক তথ্য ও পরিপ্রেক্ষিত প্রদান করা যায় তাহলে হয়ত প্লেটো পাঠে তাঁরা অধিকতর আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন, অধিকন্তু সেই পাঠ ও চর্চা সহজতর হতে পারে; সেই উদ্যোগ থেকেই এই পুস্তকটি রচনা করা হয়েছে। আমরা এতে যেসব বিষয় যুক্ত করেছি তা হলো: প্লেটো চর্চার ঐতিহাসিক বিকাশ, সক্রেটিস ও প্লেটোর সম্পর্ক এবং তাঁদের মিথস্ক্রিয়া (প্লেটোর বেশির ভাগ সংলাপের প্রধান চরিত্র হচ্ছেন সক্রেটিস); প্লেটোর সংলাপসমূহের রচনাক্রম (যাতে তাঁর ধ্যানধারণার বিবর্তন অনুধাবন করা যায়); প্লেটোর চরিত্রাবলির নামের উচ্চারণ এবং তাঁদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি (তাঁদের প্রায় সবাই ঐতিহাসিক চরিত্র); সংলাপসমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, ইত্যাদি। তাছাড়া আনুষঙ্গিক কিছু বিষয়ও এই বইটিতে যুক্ত করা হয়েছে, যেমন গ্রিক বর্ণমালা ও উচ্চারণ, প্রাচীন গ্রিসের মানচিত্র এবং কিছু পারিভাষিক শব্দ-পদ। আমাদের ধারণা ও আশা―বাংলাভাষায় ধ্রুপদী গ্রিক সাহিত্য ও দর্শনের চর্চা বিস্তৃত হবে, প্রাচীন জ্ঞানের এই অনিঃশেষ খনির সম্পদ আহরণে আমরা ব্রতী হব। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই প্লেটোর পুস্তকাদি বাংলায় অনুবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ‘প্লেটো প্রবেশিকা’ সেক্ষেত্রে একটি সহায়ক পুস্তক হিসেবে কাজ করবে।
১৯৫৩ সালের ১ লা অক্টোবর নরসিংদি জেলার বদরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে নীতি বিশ্লেষণে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সালে বাংলাদেশের সচিব পদ থেকে অবসর লাভ করেন (সর্বশেষ দায়িত্ব পালন-বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক, ম্যানিলা)। তাঁর আগ্রহের বিষয় বিজ্ঞানের দর্শন ও তুলনামূলক মিথলজি। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত পুস্তুক : প্লেটোর রিপাবলিক-এর ভূমিকা; রবীন্দ্রনাথ : কার্ল পপারের নির্বাচিত দার্শনিক রচনা; প্লেটোর আইনকানুন; রিপাবলিক, সিম্পেজিয়াম, রাষ্ট্রনায়কসহ প্লেটোর ১৭টি সংলাপের অনুবাদ এবং দর্শনের আরো কিছু ধ্রুপদী গ্রন্থ।