আমাদের এই যে স্রষ্টা এবং আমরা নগন্য সৃষ্টি। এর মাঝের প্রধান মেলবন্ধন হলো নামাজ। নামাজের যেমন ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক উপকারিতা ও গুরুত্ব রয়েছে তেমনি আরো বহুমাত্রিক নানা উপযোগিতা রয়েছে। নামাজকে আমাদের এই সমাজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ধর্মীয় একটি অনুশাসন হিসাবে উপস্থাপন করেছে। নামাজ পড়লে এত এত সাওয়াব, এটা বলে যেমন এর জন্য ভালোবাসা ও ভক্তি এবং তার সাথে সাথে উৎসাহ সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছে তেমনি নামাজ না পড়লে জাহান্নামে যেতে হবে, আগুন পুড়তে হবে এমন ভয়ও দেখিয়েছে। অন্যদিকে নামাজের নানা পার্থিব উপকারিতা, জাগতিক সাফল্যে এর অনবদ্য অবদান তেমন প্রচার না পাওয়ায় সাধারণ মুসলমানের কাছে নামাজ মূলত পরিনত হয়েছে এক আধ্যাত্মিক উপাসনা, যা দিয়ে মানুষের ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা, পারদর্শিতা বিবেচিত হচ্ছে। তবে নামাজ কি শুধুই ধর্মীয় একটি আচার, রীতিনীতি? এটি কি আধুনিক যুগে বেশি বেশি উচ্চারিত টার্মঃ প্রোডাক্টিভিটি ও ইফেকটিভ ফাংশনালিটির এক অসাধারণ পরশ পাথর নয়? নামাজ একজন মানুষকে শুধু ভালো মুসলিম নয় বরং পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলে। জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের হৃদয়ের প্রশান্তি ছিল যে নামাজ তা তার অনুসারী সাহাবীগনও চর্চা করে হয়েছেন সোনার মানুষ, ছিনিয়ে এনেছেন অভূতপূর্ব সব সাফল্য। আমাদের স্রষ্টা যেহেতু আমাদেরকে অতি উত্তম গঠনে সৃষ্টি করেছেন তাই আমাদের শারিরীক, মানসিক, পারিপার্শিক সব ধরনের বিষয় আমাদের চেয়ে ভাল জানবেন এবং তার বাতলে দেয়া পদ্ধতিই আমাদের সর্বাঙ্গীন সাফল্য এনে দেবে এটাই যৌক্তিক। মানব জীবনের গঠন, স্বভাব, দৈনন্দিন রুটিন, কার্যাবলী ইত্যাদির সাথে নামাজ খুবই মানানসই ও স্বাভাবিক। নামাজী মানুষ বাই ডিফল্ট স্মার্ট, ফিট একজন নাগরিক হতে বাধ্য। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের একজন সফল ও শক্তিশালী প্রতিনিধিত্বকারী হয়ে ওঠার কথা একজন নামাজীর। নামাজ মানুষকে একজন বেনামাজী মানুষের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে রাখে তা আমরা হয়তো সব সময় বুঝি না তবে এটাই ফ্যাক্ট। নামাজকে ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতার পাশাপাশি পার্থিব সফলতার চাবিকাঠি হিসাবে যুগপৎভাবে উপস্থাপন ও চর্চা করা গেলে সার্বিক সাফল্য লাভ অনেকটাই সহজ হবার কথা। এই বইয়ের গল্পগুলোতে এসব বিষয়েই আলোকপাত করার চেষ্টা করেছে। বইয়ের গল্পগুলো সকল শ্রেনী, পেশা, বয়সের মানুষকে নামাজ সম্পর্কে কিছুটা ভিন্নভাবে ভাবতে এবং নামাজী হতে আগ্রহী করে গড়ে তুলবে এই আশা রাখি। এই প্রত্যাশা পূরণে এই বইটি যদি পাঠক পাঠিকাদের সহায়ক হয় তাহলেই লেখাগুলো স্বার্থক সদকায়ে জারিয়া হিসাবে গণ্য হবে ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ এই বইয়ে যদি ভুল ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে তা সহ আমাদের ভুল ত্রুটিও ক্ষমা করুন। আমার পিতা-মাতা, স্ত্রী, সন্তান, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনকে এই বইয়ের কল্যাণে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দিন এই দোয়া করি।
বিস্তীর্ন মহাকাশের ছোট্ট এক স্থানঃ বাংলাদেশের খুলনায় মহাকালের তুলনায় নগন্য এক সময়ে এক মুসলিম পরিবারে জন্ম। ছোটবেলা থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজে পড়াশোনা ও কর্মজীবনের ফাঁকে ফাঁকে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বই পড়তে যেমন ভালবাসেন তেমনি অন্যকে বই পড়াতে, উপহার দিতে, পুরস্কার দিতে, বিক্রি করতে বাড়ি, মসজিদ, কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন জায়গায় বই নিয়ে তার বিচরণ। বইয়ের লিখিত, ভিডিও রিভিউও করেন প্রচারের উদ্দেশ্যে; এক কথায় বইপ্রেমী বলা চলে। এর পাশাপাশি শিশুদেরকে ভালবাসেন। শিশুদের প্রতি ভালোবাসা থেকে গঠন করেছেন মসজিদ প্রেমী নামে অনলাইন ও অফলাইন প্লাটফর্ম ও লাইব্রেরী। আনন্দের সাথে আলোর পথে স্লোগানে বাচ্চাদের মাঝে মসজিদ কেন্দ্রিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষন এর মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। মানুষকে বই পড়তে আগ্রহী করে তুলতে তাদের মাঝে ফ্রি তে বই ইস্যুর সাথে সাথে বই পড়ে ফেরত দিলে পুরস্কার দেয়ার ব্যবস্থাও চালু করেছেন তার লাইব্রেরীতে। বই তার নেশা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং তার পেশা। পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ। ব্যক্তিজীবনে তিনি বিবাহিত। পারিবারিক জীবনে ডাক্তার স্ত্রীর স্বামী এবং দুই পুত্র সন্তানের জনক। সমাজের নানা সমস্যার বিপরীতে সুন্দর সমাধানের খোঁজে চেষ্টা করে যেতে চান নিরন্তর। নিতান্ত সাদামাটা একজন striving মুসলিম হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যেতে চান মেধা, যোগ্যতা, ইনোভেশন এর মাধ্যমে। জীবনে লক্ষ্য, প্রকৃত সফলতা নিয়ে গবেষনা করতে পছন্দ করেম, সুন্দর সমাজের স্বপ্ন দেখেন ও সেই লক্ষ্যে আজীবন কাজ করে যেতে চান। পরিবার পরিজন নিয়ে পরকালীন সুন্দর, প্রশান্ত পরিনতি হিসাবে জান্নাতের প্রত্যাশায় সকলের দোয়া কামনা করেন।