মুখবন্ধ একুশ শতকের কবিতার প্রবণতা কি? কবিতা কি বিষয়ে ফর্মে উপমা চিত্রকল্পে আলাদা হতে শুরু করেছে। আমি সাম্প্রতিক সময়ের কবিতা নিবিষ্ট চিত্তে পাঠ করি। সময় ও সংকট, জীবন ও সংগ্রাম, স্বপ্ন ও হতাশা কোনো না কোনোভাবে কবিতায় প্রতিভাত হয়। আমি সুরমা খন্দকারের নতুন কবিতার বই “বেদনা কবিতার কথকতা” পড়তে গিয়ে বুঝেছি, সমকাল ও সময় কবিকে প্রভাবিত করেছে দারুণভাবে। প্রত্যেক কবির অনুভব শক্তির উপর নির্ভর করে তার পরিণাম। সুরমা তার লেখার আত্মজীবনিক অভিজ্ঞতা যেমন তুলে এনেছেন, বাদ যায়নি নিঃসর্গ ও নাগরিকতা। তার কবিতার কয়েকটি লাইন তুলে দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ‘চাই বিচার চাই’ শীর্ষক কবিতায় কবি সুরমা খন্দকার যখন বলেন - আমি দেখতে পারেনি সবুজের সাবলিক সৌন্দর্য অনুভূতির গায়ে হিংস্রতার যে প্রকট ছাপ, তীব্র বেদনাকে কোন কথারা, শব্দরা, পারছে না করতে ধারণ। কি নির্মম মানুষজন্ম! এই কয়েকটি লাইনের মধ্যে বর্তমান সময়কে দারুণ দক্ষতায় তুলে এনেছেন। সুরমা খন্দকার সমাজ সচেতন কবি। অন্তরের অতলে আছে মানুষের জন্য অপরিসীম দরদ। দেশপ্রেম তার চেতনায় প্রয়োগ। প্রকৃত প্রস্তাবে সুরমা খন্দকার প্রত্যাশা করেন এক সুষম মানবিক সমাজ। কবিতার মত সুন্দর জীবন। একজন কবির ভাব জগতে থাকে অসীম স্বপ্ন। কোলবিন বলেন- সুন্দর শব্দের সুন্দর প্রকাশ কবিতা। কবি তার সুন্দর স্বপ্নকে অসুন্দরের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবেন। নির্মাণ করবেন নিজস্ব ভালোবাসার জগত। সুরমা খন্দকার তার জগতে দিপ্যমান হোক। “বেদনা কবিতা কথকতা” বইটি পাঠক প্রিয়তা পাক- প্রত্যাশা করি। -রেজাউদ্দিন স্টালিন
জন্ম: কবি সুরমা খন্দকার, প্রকৃত নাম উম্মে মুমেনীন। তিনি নোয়াখালীর জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব একলাশপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৭৬ সালের ১০ জুলাই জন্ম গ্রহণ করেন। সাহিত্য চর্চা: এক সময় কবিতাকে গুরুত্ব দেননি, কিন্তু মনের ভিতরে নান্দনিক কাব্যিকতার বিচ্ছুরণ কবিকে ব্যাকুল করে তুলে। যার ফলশ্রুতিতে কলম চলতে থাকে মনের অজান্তে। মফস্বল শহরে বড় হওয়ার সুবাদে আশির দশকের শহর আর গ্রামের সমাজবদলের মনস্তত্ত্ব খুব কাছ থেকেই দেখেছেন । যা তার কবিতাতেও ফুঁটে উঠেছে কিছুটা হলেও। নোয়াখালী কলেজে পড়ার সময় থেকে লিখলেও মাঝখানে নানান ব্যস্ততার কারণে লেখা গতি পায়নি। পরিবারের উৎসাহে আবার কবিতা লেখা শুরু করেন । স্বামী মো: জামাল উদ্দিনসহ পুরো পরিবারের অনুপ্রেরণায় কবিতা লেখা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। তার লেখা প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ "বিরহ ভূমিতে প্রেমের চাষবাস" প্রকাশিত হয় বইমেলা ২০২২। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ "বেদনা কবিতার কথকতা" ২০২৩ সালের বইমেলায় প্রকাশিত। এছাড়াও বেশ কিছু যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত। প্রকাশের অপেক্ষায় আছে আরো কিছু বই।