এই উপন্যাসকে পাঠক ‘হাই ফ্যান্টাসি’ বলে পাঠ করতে পারেন। উইলিয়াম মরিসের জগতের সঙ্গে লেখকের সাযুজ্য বেশি। তবে টলেকিনের জগতের মায়া পুরোপুরি অনুপস্থিত বলা যাবে না। না কি তিনি রাহুল সাংকৃত্যায়নের অথবা তারাশংকরের ত্রয়ি উপন্যাসের ধারাবহিকতায় লিখছেন! লেখক এঁকে বলছেন আদি রাজনীতির কাল্পনিক উপন্যাস। আদি রাজনীতি কারণ তখনো আজকের রাষ্ট্রের কাঠামো গড়ে ওঠেনি। কিন্তু মানুষের সংঘবদ্ধতার ঘাত-প্রতিঘাত শুরু হয়েছে। তখনো সংবিধান বা লিখিত আইন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি কিন্তু প্রথা বা উৎসব সামাজিক গঠনের মৌলিক অনুষঙ্গ হয়ে আছে। পাঠক নিজেকে খুঁজে পাবেন এমন এক সময়ে যখন জগতের অস্পষ্টতা নতুন সব সত্যকে গড়ে তুলতো। মানু নামক একটা মানবগোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করতে করতে ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধোত্তর অঞ্চল থেকে কয়েক কাফেলা মানুষ পালিয়ে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে। সেখানে তারা ধীরে ধীরে গড়ে তোলে আরেকটা সভ্যতা। এই উপন্যাস একই সঙ্গে প্রেমের আর সমাজের প্রথাকে অস্বীকার করে নতুন কাঠামো তৈরির। একটি সভ্যতা থেকে পালিয়ে গিয়ে নতুন করে সভ্যতা গড়ে তোলার কাহিনী। শিকার, যুদ্ধ, যাযাবর জীবন, চাষাবাদ, হিংস্র পশুদের সাথে দ্বন্দ্ব, সংঘাত, সংঘর্ষ, মৃত্যু আতঙ্ক- সব কিছুকে ছাপিয়ে একটা ট্রাজিক প্রেমের গল্প ‘পরম্পরা’। -জাভেদ হুসেন