মার্গারেট সিমন, প্রায় বারো বছরের এক কিশোরী। বয়সটা একটু বিটকেলে। না বড়, না ছোট- বয়ঃসন্ধিকাল। এই বয়সে মার্গারেট পুরনো পরিচিত এলাকা নিউইয়র্ক ছেড়ে যাচ্ছে নতুন এলাকা নিউজার্সির ফারব্রুকে। নতুন জায়গা, নতুন বন্ধু, নতুন আলোচনার বিষয়বস্তু। শিশু বয়স পার হয়ে এসে বড় হয়ে উঠার জন্য অবশ্যম্ভাবী যে শারীরিক পরিবর্তন, তার জন্য উৎকণ্ঠিত আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় তাদের আলোচনায়। সাথে থাকে নিজেদের ভালোলাগা, ছেলে বন্ধু, স্কুলের শিক্ষক আরও অনেক কিছু। ইহুদি পিতা এবং ক্যাথলিক মা-এর কন্যা মার্গারেটের নিজস্ব কিংবা চাপিয়ে দেওয়া ধর্ম নেই। তবে মার্গারেটের ঈশ্বর আছে, সে ঈশ্বরের সাথে কথা বলে তার সব কিছু নিয়ে, এমনকি তার ধর্ম নিয়েও। নিজস্ব ধর্ম না থাকার কারণে সামাজিক মূলস্রোতের বাইরে থাকা মার্গারেট ধর্মকে বোঝার চেষ্টা করে ঈশ্বরকে সাথে নিয়েই। মার্গারেট অসম্ভব মেধাবী কিংবা দারুণ প্রাতিভাবান মেয়ে নয়, বরং খুব সাধারণ বাস্তববাদী এক কিশোরী। যে তার সুক্ষ্ণ অনুভূতি দিয়ে বুঝতে চায় তার চারপাশের সব কিছু। কিংবা মার্গারেট আমাদের মতো অনেকেরই হারানো ছোটবেলা, যারা দারুণ একটা সময় পার করেছি স্কুলে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে হইহই করে, নিজেদের মধ্যে নানা গোপনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। জুডি ব্লুমের এই বই আমেরিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে। বিষয় ভাবনায় বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের জন্য বইটি এখনো খুব প্রাসঙ্গিক।