এই গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ, এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক হলেও প্রায় অনালোচিত। পাকিস্তান আমলে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য রূপপুরে জমি অধিগ্রহণ করা হয়, তখন বিশ্বজুড়ে এই প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল উন্নয়ন সাফল্য ও গৌরবের বিষয়। কিন্তু এর প্রায় ৬০ বছর পর যখন এই প্রকল্প আরও বৃহদাকারে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, ততদিনে নানান বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো ভীতি ও উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট, প্রকল্পের অতিব্যয়, ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল ইত্যাদি প্রশ্ন তো আছেই, চেরনোবিল ও ফুকুশিমার কারণে পারমাণবিক বিদ্যুতের বহুমাত্রিক বিপদের ঝুঁকি এবং ভয়ংকর বিপর্যয় দেশে দেশে এর বিরুদ্ধে প্রবল জনমত তৈরি করেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ বিষয়ে সর্বজনের অবগতি ও আলোচনার গুরুত্ব অনুভব করে এই গ্রন্থের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের ঋণনির্ভর পরনির্ভর এই প্রকল্পের প্রাসঙ্গিকতা, আর্থিক ও পরিবেশগত দিক, বর্জ্যসহ বিবিধ ঝুঁকি, জননিরাপত্তা ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে লিখেছেন দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, সমাজ বিশ্লেষক, গবেষক। এর মধ্যে কয়েকটি লেখা ইংরেজি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। লেখকদের মধ্যে আছেন - এম ভি রামানা, আশ্বিননকুমার, জিয়া মিয়া, এ রহমান, কামরুল হায়দার, এম হারুণ উজ জামান, মোশাহিদা সুলতানা, কল্লোল মোস্তফা, মওদুদ রহমান, দেবাশীষ সরকার, মাহবুব রুবাইয়াৎ, আবুল হাসান রুবেল ও সভেতলানা আলেক্সিয়েভিচ। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের সংলাপও পরিশিষ্টে সংযোজন করা হয়েছে।