“এক জীবন এক ইতিহাস" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ সুখে-দুঃখে পূর্ণকালীন সাংবাদিক জীবনের ৬০টি বছর পেরিয়ে এলাম। হাতেখড়ি আরাে আগেই হয়েছিল। আমাদের দিনে সাংবাদিকতা আজকের দিনের মতাে ছিল । মাস কমিউনিকেশন’ কথাটা তখনাে আবিষ্কারই হয়নি। ভারত উপমহাদেশে কোথাও সাংবাদিকতা শেখার বিদ্যালয় ছিল না। এমনকি আমাদের শাসক দেশ বিলেতেও নয়। বিলেতে প্রথম সাংবাদিকতার কোর্স খােলা হয় লন্ডনের নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ষাটের দশকে। কিন্তু সেখানের সৃষ্ট কেতাবি সাংবাদিকরা তখন পত্র-পত্রিকায় চাকরি পেতেন না। তাঁরা বড়জোর জনসংযােগের চাকরিই আশা করতে পারতেন। | বিলেতে আর আমেরিকায় দশ-বিশ বছর আগেও পত্রিকা সাংবাদিকতায় যারা সর্বাধিক খ্যাতিমান ছিলেন তাঁদের অনেকেই কপি বয়’ কিংবা ওরকম কোনাে ছােট পদে পত্রিকার অফিসে ঢুকেছিলেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ওপরে উঠেছেন। সে গােত্রের ডাকসাইটে সাংবাদিক এখনাে দু-চারজন পাওয়া যাবে। আমাদের কালে এবং আমাদের দেশে সাংবাদিকতা শেখা অনেকটা কালিদাসের যুগের মতাে টোল ও আশ্রমগুলাের মতােই ছিল - গুরুর অধীনে এবং তার তত্ত্বাবধানে শিখতে হতাে। তবে গুরু না বলে আমরা বলতাম ওমুক ভাই, তমুক ভাই - যারা সে পেশায় ঢুকেছিলেন আমাদের আগে। অন্য কেউ কেউ সখ করে কিংবা বড় কোনাে চাকরির সােপান হিসেবে সাময়িকভাবে আসতেন। আমার তত্ত্বাবধানে কাজ শিখছিলেন, এমন একজন তাে আমাকে বলেই দিয়েছিলেন, “দেড়শাে টাকার সাব-এডিটরি আপনার জীবনের অ্যাম্বিশন’ হতে পারে - আমার নয়।....