মনুষ্য জীবনের সহস্র যন্ত্রণা ছাড়িয়ে যে আহবান আজ ধ্বনিত হবে কণ্ঠে কণ্ঠে, উত্তাল নদীর স্রোতে, টিনের চালের গানের কলে, কদমের সবুজ পাতায় তা শুধু গান নয়-এক জীবনের উপাখ্যান। বিশখালী নদীর বিকেল ছোঁয়া সূর্যের কসম। কসম আমার মায়ের সেই প্রসব বেদনারও, যা ভূমিষ্ঠ করেছে আমাদের এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের। এক জীবনের যন্ত্রণা অস্তমিত সূর্যের মতো বা চন্দ্রগ্রস্ত ব্যাধির মতো ছড়িয়ে যাবে জনে জনে। মুখে তাদেরই রেখে যাওয়া কালাম নিয়ে সর্বকালে গুণী সকল মানবের চরণে সালাম জানাই। আগন্তুক পাখি, বিরল সেই বৃক্ষ সকলেই সাক্ষী- নবগঙ্গা, গড়াই, চিত্রা, ইছামতি, তিস্তা, ভৈরব ও বিশখালী নদী এবং কাশীপুর রেলপথের সেই আহবান সান্ধ্য ধূপের মতো চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়বে। একজন্মে মনুষ্য জীবনের দুর্দশা খুঁচবার নয়। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ ভাইশোকা পাখির মতো যে এখনও কাঁঠাল ডালে বসে ও ভাই, কত ভোগ বলে বিলাপ তোলে। মৃত্যুও এই ভাগ্যাহতকে রেহাই দিতে পারে না। এক জন্মের পাপ তার অপর জনমকেও ছেয়ে দেয় যতনে। আখ্যানের নায়কের শবদেহেও সেই চিহ্ন বিদ্যমান। আখ্যানের নায়ককে বেষ্টন করে যারা আবর্তিত হয়েছে বা নায়ক যে চক্রটিকে সঙ্গ দিয়েছে তাদের পুরো পরিসরটিকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছে এক অলৌকিক সোনার নাও আর পবনের বৈঠা।