জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কিত স্মৃতিকথামূলক সংকলনগ্রন্থ 'ইতিহাস কথা কয়' যা জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। লেখাগুলোতে আমার জীবনের সোনালি দিনগুলোর কথা ও জাতির পিতার সাথে অনেক স্মৃতি উল্লেখ আছে। জাতির পিতার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। তাঁর সান্নিধ্য লাভ করে আমার জীবন ধন্য। প্রত্যেক মানুষের জীবনেই ভালো বা খারাপ দিন আছে। আমার জীবনেও ভালো বা খারাপ দিন ছিল। আমি সাত বার কারানির্যাতন ভোগ করেছি। ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্টের পর গৃহবন্দি অবস্থা থেকে বারবার খুনিচক্র আমাকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে নিয়ে নির্যাতন করেছে। কিন্তু আমি আপস করিনি। পুলিশ কন্ট্রোলরুমে নিয়ে যখন নির্যাতন করা হয়েছে, তখন মৃত্যু ছিল আমার খুব কাছে। ময়মনসিংহ কারাগারে ফাঁসির আসামির কনডেম সেলে থেকেও মনে করেছি ভালো আছি। '৭৫-এর পর একনাগাড়ে তিন বছর ময়মনসিংহ ও কুষ্টিয়া কারাগারে বন্দি ছিলাম। ফাঁসির আসামির কনডেম সেলে জীবন কাটিয়েছি। কাছে থেকে মৃত্যুকে দেখেছি। কিন্তু অন্যায়ের কাছে কখনো নতি স্বীকার করিনি। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা আমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। তারপর আমাকে সিলেট কারাগারে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। এরপর আমার নিজের জন্মস্থান ভোলা থেকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল কারাগারে নির্জন প্রকোষ্ঠে বন্দি করে রেখেছে। ১৯৮৫ সলে কুমিল্লা কারাগারে রাখা হয়েছে। এরশাদের শাসনামলে চারবার, খালেদা জিয়ার শাসনামলে দু'বারসহ স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বমোট সাতবার-ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, কাশিমপুর এবং আবারও কুষ্টিয়া কারাগারে-বন্দিজীবন কাটিয়েছি। '৮২ সালে গ্রেপ্তারের পর চোখ বেঁধে আমাকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। প্রতিটি কারাগারেই আমাকে পৃথক করে রাখা হয়েছিল-যেন কোনো বন্দির সাথে কথা বলতে না পারি। ১৯৯৫ সালে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের সময় খালেদা জিয়ার সরকার আমাকে গ্রেফতার করে রাজশাহী কারাগারে পাঠিয়েছে। ২০০২ সালে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে অজ্ঞাতস্থানে পরে কাশিমপুর কারাগারে কনডেম সেলে রেখেছে। এরপর কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠানো হয়। আমার জীবনের সোনালি দিন ১৯৬৯-এর ২৩শে ফেব্রুয়ারি, যেদিন বাংলার জনগণের পক্ষ থেকে প্রিয়নেতাকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করেছিলাম। '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে আসাদ-মতিউর-মকবুল-রুস্তম-
তোফায়েল আহমেদ ২২ অক্টোবর ১৯৪৩ জন্মগ্রহন করেন। তিনি একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি পাঁচ দফা জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদের একজন সদস্য এবং তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।