‘ধূসর কুয়াশায় রোদেলা সকাল’ ভিন্ন মেজাজের- অন্য আমেজের কাব্যগ্রন্থ। পাণ্ডুলিপি পড়তে গিয়ে কবি আবদুল মাজেদের কাব্য-ভাবনা ও প্রকাশ-প্রক্রিয়ায় এই মেজাজ-আমেজের স্পর্শ পেয়ে চমৎকৃত হয়েছি। ‘ধূসর কুয়াশায় রোদেলা সকাল’ নামটির মধ্যেই ধূসর কুয়াশাচ্ছন্ন অনুভূতিপ্রবণ জীবন-লড়াইয়ে উতরে রোদেলা সকালে পৌঁছার ইতিবাচক শক্তি অনুভব করতে পারি। এজন্য শুরুতেই ‘ধূসর কুয়াশায় রোদেলা সকাল’ নিয়ে আশাবাদ জেগে ওঠে। কবি আবদুল মাজেদের কবিতায় স্মৃতিমগ্ন আবেগ-অনুভূতি, রাগ-অনুরাগ, ইতি-নেতির ছোট ছোট গল্প রয়েছে। উদাত্ত হৃদয়জাত এই বুদ্ধিদীপ্ত মানবীয় কাব্য-গল্পগুলো ছোট হলেও তাঁর কবিতাকে শুধু আকর্ষণীয়ই করেনি- সব সময়ের পাঠ্য- বলা যায় চিরায়ত হওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এজন্যই কবির দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধূসর কুয়াশায় রোদেলা সকাল’-এর কবিতাসমুদয় পাঠককে আচমকা এমন এক আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে, যা খুলেও দিতে পারে স্মৃতিময় গোপন-মোহন এক জানালা। মনের ভেতর চুপ করে জেগে থাকা টুকরো টুকরো বিষয়কে কবির শিল্পপ্রয়োগ-শৈলী কতটা উপভোগ্য করে তুলতে পারে, তা কবি আবদুল মাজেদের এই গ্রন্থভুক্ত কিছুটা ইমপ্রেশনিস্ট- কিছুটা চেতনাপ্রবাহ রীতির মিশেলে সৃজিত কবিতা পাঠে অনুভব করা যাবে, এটা বলা যায়। ধূসর কুয়াশাময়তায় রোদেলা সকালের ঝলমলিয়ে উঠাকে কবি ইতিবাচক চেতনায় এমন প্রক্রিয়ায় কবিতাগুলোতে ধারণ করেছেন- যাতে পেছনে হারিয়ে-আসা নির্মম স্মৃতি ও উদ্দীপ্ত স্বপ্ন এ দুইয়ের সমন্বয় জীবন-অভিজ্ঞতায় রূপ লাভ করেছে। কবি আবদুল মাজেদের কবিতার বিষয়ে-চিত্রকল্পে-শব্দ-শিল্পে এবং কাব্য-মহিমাতে সরলরৈখিক অবয়বের অন্তরালে জীবন-দর্শনের নানা দিক বিধৃত রয়েছে। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধূসর কুয়াশায় রোদেলা সকাল’ আবেগপ্রবণ এবং নিরাবেগ উভয় পাঠকের সমভাবে উপভোগ্য হবে এবং পাঠকপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হবে- এ কথা আমরা বলতেই পারি। - ইউসুফ শরীফ
ষাটের দশকের গোড়ার দিকের কোন এক সময়ে সীমান্তের ওপারে সেনডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করার পর ভিটেছাড়া হয়ে বাবার হাত ধরে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে যশোরের বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামে থিতু হন। বাজুয়াডাঙ্গা বেসরকারী প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক বৃত্তি নিয়ে কুয়াদা হাই স্কুলে ভর্তি। অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র বৃত্তি পেয়ে ১৯৮২ সালে মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে এস.এস.সি. পাশ ও যশোর সরকারি মধুসূদন কলেজে ভর্তি এবারো মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। "বিয়ানের কাজ চাচা আমার করে ভাইটেল বেলা" ধরণে ১৯৮৮ সালের মাস্টার্স পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯২ সালে। চার বছর সেশন জ্যামে পিছিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মন-মনন ও কর্মেও পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। যথারীতি চলার পথে বহুবিধ "চাচীজানের ঠেলা" খেতে খেতে এখন কর্মজী- বনের শেষ পর্যায়ে উপনীত। তিনি বর্তমানে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে মধ্যম সারির কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে তার পরিবার।