জীবনপল্লীর মতো করে একাত্তরের বিদ্রোহী মার্চের রূপকথার প্রথম দিন থেকে বাহাত্তরের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন দিনের কথাগুলো নিবিড় ছবির মতো করে তুলে ধরেছেন জুবি। জেবুননেছা জুবি। উনিশশ তিপ্পান্ন সালের ২৮ এপ্রিল এ পৃথিবীতে এসেছেন এ ব্যতিক্রমী জীবনজুটির ঘরে। জননী আমিনা আক্তার এবং জনক আবদুল গফুর ছিলেন পাকিস্তানের কঠোর কঠিন জীবনের কমিউনিস্ট আন্দোলনের গোপন ব্যবস্থা বিন্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত। শৈশব, কৈশোর, যৌবনে যে সংগ্রামী ভুবনে জুবির বিস্তার-বিকাশ, বড় হয়ে ওঠা। বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনে উপপ্রধান হিসেবে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। অর্থনীতিতে ¯œাতকোত্তর সীমা অতিক্রম করেছেন মস্কোর পৃথিবীখ্যাত প্যাট্রিস লুমুম্বা মৈত্রী বিশ^বিদ্যালয় থেকে জীবনের অভিজ্ঞতার ভাঁড়ার টইটম্বুর। জেবুননেছা জুবির ‘গৌরবের একাত্তর এবং’ গ্রন্থটি মূলত নিতান্ত স্মৃতিনির্ভর। এমনি রচনার গভীরে প্রাণময়তা থাকে। যদিও বর্ণিত তথ্য সদা যথাযথ না-ও হতে পারে। বইটি এই অর্থে অসীম, একই সঙ্গে সীমাবদ্ধ। জুবির বর্ণাঢ্য প্রথমকাল। যখন পৃথিবী কাঁপানো এক মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তার অনবদ্য অতিবাহন। পরিবারের গৃহ যেখানে রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র, সে পরিবারের সদস্যের দেখার চোখ আলাদা। এই পুস্তকটি প্রকৃত অর্থে স্মৃতিগাথা হিসেবেই গণ্য হবে। গৌরবের মহান একাত্তর এবং কিছুটা পেরিয়ে সময়ের যে ফ্রেম, তা অসাধারণ। জুবি সে সময়টা জীবনপল্লীতে কেমন তুলে ধরতে পেরেছেন, সেটা পাঠকের পাটাতনে বিবেচ্য।