আদিম যুগের মানুষ ছিল পরিবেশ ও প্রকৃতি নির্ভর। সভ্যতার বিকাশ লাভের সাথে সাথে প্রকৃতির কোলে লালিত মানুষ সবুজের মায়া ছেড়ে হারিয়ে যাচ্ছে আকাশের ওপারে আকাশে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন ও বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড় অরণ্য, নদী, ঢেউ খেলানো গ্রামীণ দিঘি, জলাভূমি, উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ, বৃক্ষ, তরুলতা, পুষ্পে ভরা বসুন্ধরা। নবপ্রজন্মের হাতে এতো সময় নেই বৃক্ষলতা অবলোকনের। আমাদের অজ্ঞতা নির্দয় আচরণ ও অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ডে ছায়া শীতল সুন্দর পরিবেশটা আমরাই ধ্বংস করে যাচ্ছি। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ প্রকৃতি। বিপন্ন হচ্ছে বন বনানী। তরুলতা, লতাগুল্ম, পাখ-পাখালি, মৃত্তিকা ও ফুল ফল নিয়ে যাঁরা উচ্চতর পড়াশুনা করেন; গবেষণায় নিয়োজিত আছেন আমি তাঁদের কেউ নই। ছোটবেলা থেকে বন বনানী, বৃক্ষগুল্মের প্রতি আদর ভালোবাসা; পুষ্পের সৌরভ সৌন্দর্য আমাকে তরুলতার কাছে টেনে এনেছে। একটানা পঁয়ত্রিশ বছর চা বাগান পরিচালনার দায়িত্বে থাকার সুবাদে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, শ্রীমঙ্গল, সিলেটের বিভিন্ন চা বাগান এবং সংলগ্ন পাহাড় উপত্যকা পর্যবেক্ষণের সুযোগ হাতে আসে। যখন যেখানে গিয়েছি যা দেখেছি, আরো দেখার আরো জানার চেষ্টা করেছি। চোখের দেখা অনুভূতিটুকু আরো জেনেশুনে কাগজ কলমে তুলে ধরেছি; লেখায় অপূর্ণতা থাকতে পারে। সন্মানিত পাঠক মহলের মতামতের ভিত্তিতে আরো বর্ধিত কলেবরে আগামী সংকলনে সংযোজনের আশা রাখি।
'ফুলের কথা' গ্রন্থ আকারে প্রকাশনায় আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন শ্রদ্ধেয় বড়ভাই খ্যাতিমান নিউরো সার্জন প্রফেসর ডাক্তার এল. এ. কাদেরী কিন্তু মহামারি করোনার ভয়াবহতায় তাঁর জীবদ্দশায় গ্রন্থখানি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। বিশিষ্ট লেখক গবেষক অধ্যক্ষ ড. আনোয়ারা আলম এবং বন্ধুবর নিসর্গ কবি, প্রকৃতি সম্পাদক মুশফিক হোসাইন গ্রন্থটি দ্রুত প্রকাশনায় অনুপ্রাণিত করেছেন তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। সর্বশেষে আবির প্রকাশনের সত্ত্বাধিকারী কবি সাংবাদিক মুহম্মদ নুরুল আবসার গ্রন্থ প্রকাশনায় যে মেধা ও শ্রম দিয়েছেন তা অতুলনীয়। গ্রন্থটি পাঠকের হৃদয়ে স্থান পেলে পরিশ্রম সার্থক মনে করি।