ফ্ল্যাপে লিখা কথা তাঁর রচনায় বাস্তব জীবনের বিচিত্র সমস্যা, নরনারী-জীবনের আত্নিক সংঘাত, প্রবৃত্তির বিচিত্র লীলা, আসক্তি, ঈর্ষা, কামচাতিার কুণ্ঠাহীন প্রকাশ ঘটেছে। সেইসঙ্গে পুরোনো ভূমিনির্ভর জীবনের অবক্ষয়, জমিদারতন্ত্রী সমাজের ব্যভিচার, অর্থনৈতিক অসাম্য, ভূমিহীনের জীবনের ব্যর্থতার ইতিহাস ও মহাযুদ্ধান্তের অবিসংবাদিত ফলস্বরূপ মানুষের সামগ্রিক মূল্যবোধের বিনষ্টি তাঁর গল্প-উপন্যাসের বিষয়। ব্যক্তিচরিত্রের মনের গহনে অনুসন্ধান চালিয়ে মনস্তাত্ত্বিক বৈজিক আকাঙ্ক্ষার গতিপ্রকৃতির যথার্থ রূপরেখা আঁকতে চেয়েছেন। সুপ্ত চৈতন্য ও প্রবৃত্তির অন্ধকার দিকটি উদ্ঘাটিত করতে গিয়ে ‘পাপ’ ‘পুণ্য’ প্রভৃতি গতানুগতিক অভিধায় আবন্ধ না থেকে ‘জীবন যেরকম’ সেটাই দেখবার চেষ্টা করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্রের কালে তিনি স্বতন্ত্রধর্মী বাস্তববাদী লেখক রূপেই পাঠকের মনোযোগ আকর্ষন করেছিলেন। ... আপাত বিস্মৃতির অতল থেকেই এই বাস্তববাদী লেখক হয়তো একদিন আবার পুনর্মূল্যায়নের আলোকে নতুন করে আবিষ্কৃত হবেন। গোপাল হালদারের মতো করেই হয়তো আগামী দিনের সমালোচক -পাঠক বলবেন-‘তিনি জীবনকে বাস্তব দৃষ্টিতে দেখবার ও সমাজকে শুভবুদ্ধিতে পরিচালনা করবার একটা ঐতিহ্য বাংলা সাহিত্যে দান করে গিয়েছেন। তাঁর সাহিত্যিক ঐতিহ্য, যুক্তিনিষ্ঠ সমাববুদ্ধি, সর্ব বিষয়ে প্রগতিমুখিনতা।সেখানে নরেশচন্দ্র আধুনিক ভাবনার নির্ভীক অক্লান্ত পথিক বলে গণ্য হবেন।’