বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার উপর “বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থাঃ স্বাধীনতার ৫০ বছর” এই গ্রন্থটি প্রকাশ করার তৌফিক দেয়ায় সর্বপ্রথম মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা একদিনে গড়ে ওঠেনি। ইতোমধ্যে আমাদের দেশ রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ পরবতী স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করেছে। রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগও স্বাধীন রাষ্ট্রে আপন স্বাধীনতায় এগিয়ে চলেছে। “বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থাঃ স্বাধীনতার ৫০ বছর” বইয়ে মূলত বিচার ব্যবস্থার উন্নতি ও ক্রমবিকাশ ৫০ বছরে কতটুকু অর্জিত হলো তার রুপরেখা কোন সময়কালে কিভাবে হলো সেটি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনা, বিচার প্রশাসন এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়সাধন ইত্যাদি নানাবিধ কারণে আধুনিক কল্যানকামী রাষ্ট্রে আইন প্রণয়ন করা হয়। আইন হলো ন্যায় প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র কতৃর্ক স্বীকৃত ও প্রয়োগকৃত নীতিমালা, যা মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। আইনের মাধ্যমে নাগরিকের সামাজিক শান্তি, নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা যায়। মানব সৃষ্টির সাথে সাথে আইনের উৎপত্তি হয়েছে এবং মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের পথ ধরে আইনের সাথে সাথে বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও নতুন আইনের সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের দেশে প্রায় ১৫০০ আইনের প্রয়োগ আছে। আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সকল নাগরিকের আইন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা বাঞ্চনীয়। কারণ আইন না জানা কোনো ওজর হতে পারেনা। আইন ও বিচার ব্যবস্থা তথা সংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা জানা সকল নাগরিকের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সে কারণে বাংলাদেশের সংবিধান সহ গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশকীয় আইন একত্রিত করে সেটি কিভাবে সঠিক পন্থায় বা কোন ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নতি লাভ করেছে তার বিস্তারিত “বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থাঃ স্বাধীনতার ৫০ বছর” গ্রন্থটিতে সংকলন করা হয়েছে। বইটি পড়ে আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সহ অন্যান্য ব্যক্তিগণ বিচার ব্যবস্থা ও গুরুত্বপূর্ণ আইন সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে। এ গ্রন্থে যে সকল আইনের উপর আলোকপাত করা হয়েছে তা থেকে আইনের শিক্ষার্থী, বিচারক, পুলিশ, আইনজীবী, বিচার ব্যবস্থাপনার সাথে যারা সম্পৃক্ত তারা উপকৃত হবে বলে মনে করি। গ্রন্থটি প্রকাশের অনুমতি দেয়ায় সদাশয় সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পান্ডুলিপি রচনার সময় বিভিন্ন উপদেশ, দিক-নির্দেশনা, তথ্য ও উৎসাহ দিয়ে যারা সহায়তা করেছেন তাদের মধ্যে তাইমুম আলী আহাদ এবং তার লেখক হিসেবে আবির্ভাব আমাকে অভিভূত করেছে। আমি আমার সহযোগী লেখকের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। গ্রন্থটির মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের জন্য মাননীয় জেলা জজ জনাব আবু আহছান হাবিব স্যারের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন সত্ত্বেও কিছু ভুলত্রুটি থাকা অস্বাভাবিক নয়। মুদ্রণজনিত কোনো ভুলত্রুটি কোনো পাঠকের নিকট গোচরীভুত হলে তা অবগত করলে সংশোধনের জন্য আমার প্রয়াস থাকবে। পরিশেষে আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা পাঠকদের নিকট গ্রহণযোগ্য হলে আমি আমার কাজের সার্থকতা খুঁজে পাবো বলে বিশ্বাস করি।
Title
বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা - স্বাধীনতার ৫০ বছর
১৯৮৪ সালের ৩১ জানুয়ারি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কুশোডাঙ্গা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০০ সালে এসএসসি ও ২০০২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০০৬ সালে এলএলবি (অনার্স) ও ২০০৭ সালে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি ও ক্রিমিনাল জাস্টিস বিভাগ থেকে মাস্টার্স এবং উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ থেকে বিশেষ ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধীনে এমফিল (লিডিং টু পিএইচডি) প্রোগ্রামে গবেষণারত রয়েছেন। জনাব ইসলাম প্রথমবারেই ৩য় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে ‘সহকারী জজ’ হিসেবে খুলনা জেলা জজশীপে যোগদান করেন। অতঃপর পদোন্নতি পেয়ে ‘সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’ হিসেবে ঢাকায় এবং ‘যুগ্ম জেলা জজ’ হিসেবে ঠাঁকুরগাঁও, মেহেরপুর এবং ঝিনাইদহ জেলা জজশীপে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ‘অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ’ হিসেবে কুষ্টিয়া জেলা জজশীপে কর্মরত আছেন। মা-বাবার ৭ ছেলে ও ১ মেয়ের সংসারে তার অবস্থান অষ্টম। বাবা আবুল হোসেন (রাহেমাহুল্লাহ), অধ্যাপক (অব.) আর মা জামিলা বেগম (রাহেমাহাল্লাহ), গৃহিনী। ব্যক্তিগত জীবনে জনাব ইসলাম বিবাহিত। স্ত্রী জনাবা ফেরদৌসী আক্তার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া’র ইংরেজি বিভাগে ‘সহকারী অধ্যাপিকা’ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ২ কন্যা এবং ১ পুত্র সন্তানের জনক। কর্মব্যস্ততার ফাঁকে তিনি বই পড়া, গবেষণা, লেখালেখি আর পরিবারকে নিয়ে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। ইতোপূর্বে তার লিখিত ‘সাংবিধানিক আইনের সহজপাঠ’, শিশু আইনের উপরে Juvenile Delinquency in Bangladesh: Identifying the causes with prevention and Rehabilitation এবং ‘বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা ঃ স্বাধীনতার ৫০ বছর’ শিরোনামে ৩টি বই প্রকাশিত হয়েছে। শিশু আইনের উপরে লিখিত বইটি বিশ্বের মোট ৯টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাছাড়া জনাব মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম আইন গবেষক ও কলামিস্ট হিসেবে পত্রপত্রিকায় সমসাময়িক বিষয় ও আইন নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করে থাকেন।