বাংলাদেশে আবৃত্তির প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি রচিত হয়েছে আশির দশকে। সেসময় হতেই সাংগঠনিক চর্চার পাশাপাশি নিয়মিতভাবে আবৃত্তি কর্মশালা পরিচালিত হচ্ছে। আবৃত্তি সংগঠনগুলো অনুশীলনের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করে তাদের দলীয় ও একক আবৃত্তিতে সম্পৃক্ত করে। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে গিয়ে আবৃত্তি সম্পর্কে বিষদ জ্ঞান আহরণ এবং ত্বত্তীয় ও প্রায়োগিক শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে। প্রাথমিকভাবে নাটক ও বাংলা ভাষা শিক্ষার কিছু বই এবং আবৃত্তি বিষয়ক কতিপয় প্রবন্ধ এ চাহিদার হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগানো হয়। পরবর্তী সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের আবৃত্তিগুরুগণ এ চাহিদা পূরণে এগিয়ে আসেন। বর্তমানে সে বইগুলো বাজারে পাওয়া যায়। আলম বাঙালি একজন প্রতিষ্ঠিত আবৃত্তিশিল্পী এবং প্রতিশ্রতিশীল আবৃত্তি শিক্ষক। শরীরে ও মনে চরম শিল্পস্বত্তা ধারণ করেন সদালাপী এই শিল্পী। আবৃত্তির জন্য নিবেদিতপ্রাণ আলম শিক্ষার্থীদের মন ও মানস গঠনে কবিতা ও আবৃত্তি বিষয়ক একটি পুস্তক রচনায় প্রবৃত্ত হয়েছেন। তারই ফসল এই “আবৃত্তি’র ভেতর বাহির” বইখানি। একজন আবৃত্তিশিল্পীর জন্য কবিতার ভিতর-বাহির জানা খুবই প্রয়োজন। এই বইটিতে কবিতা সম্পর্কে যেমন ধারণা দেওয়া হয়েছে, তেমনি উচ্চারণ, ভাব-রস, ছন্দ প্রকরণ, অভিব্যক্তি ইত্যাদি বিষয়গুলোকে যত্ন সহকারে আবৃত্তি শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে উপস্থাপন করা হয়েছে। একজন নবীন আবৃত্তিকর্মীর জন্য অতীব প্রয়োজনীয় অনুশীলনগুলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সাজানো হয়েছে। আবৃত্তি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী সাধারণ পাঠকও এই গ্রন্থ পাঠে আনন্দ লাভ করতে পারবেন। আশা করি “আবৃত্তি’র ভেতর বাহির” বইটি একজন আবৃত্তিশিল্পীর নিত্য সহচর হয়ে উঠবে। আমাদের আবৃত্তিশিল্পে শিক্ষামূলক ভালো বইয়ের অভাব পূরণে এটি যথেষ্ট সহায়ক হবে বলেই বিশ্বাস করি।