গল্পবাজ হিসেবে আমাকে অনেকে চিনলেও আমার লেখালিখির হাত তেমন সুবিধার না। অধিকাংশ লেখাই দুর্বল, তাহলে সহজাত প্রশ্ন আসে কবিতার বই বের করলেন কেন? এ প্রশ্নের দুইটা উত্তর হয়। প্রথমত, এটা কবিতার বইই না বা ছবির বইও না বরং নিজের পৌনঃপুনিক আগ্রাসী চিন্তাকে একটা গঠনমূলক কিছুতে রূপান্তরের চেষ্টা। দ্বিতীয়ত, আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই, আর কোন কারণ নাই। বহুদিন আগের ইচ্ছা। যে ইচ্ছা বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং পরিপার্শ্বের জন্য ক্ষতিকারক নয়, তা পূরণ করে ফেলতে হয়। খুব ছোট থাকতে রোলটানা সানফ্লাওয়ার খাতা নিয়ে নানুর সাথে গ্রামে যেতাম। উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঘুরাফিরার মাঝে আমার মধ্যে আবেগ ভর করলে যাতে সেটা লিখে ফেলতে পারি। আশ্চর্য হলেও সত্য, আমি ছয় বছর বয়স থেকেই এসব করতাম। আবার আমি জীবনে প্রথম নিবেদনপত্র লিখেছি স্কুলে বসে চার বছর বয়সে, সেটাও কাউকে দেইনাই। নিজে লিখে নিজেই ছলছল চোখে কেটে ছিঁড়ে ফেলেছি। এসব বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে সহজাত ভাবেই নিঃসঙ্গতা অনেকের থাকে। আবার প্রত্যেকের আত্মার হয়ত নিজস্ব দহন থাকে। সে আগুন, সে দহন, সে নিঃসঙ্গতা অন্যকে উষ্ণতা বা সঙ্গ দেবার ক্ষমতা রাখলে নিঃসন্দেহে তা সহভাগিতা করা উত্তম। মানুষ এক জীবনে বহুবার জন্ম নেয়, বহুবার মরে। এই সূচনা আর সংক্রান্তি মিলিয়েই জীবন, জগৎসংসারের অর্থ। ধরে নেয়া যাক, আমার এই "সংক্রান্তি' তেমনি এক অতিসাধারণ সংক্রান্তি ।
মুহাম্মদ ইরফানের জন্ম ১৯৯৩ সালে। পেশায় বর্তমানে তিনি একজন স্থপতি। ঢাকায় তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। তিনি একজন শিল্পী, গ্রাফিক ডিজাইনার, লেখক। তবে মূলত তিনি নিজেকে একটা মানুষ হবার প্রক্রিয়া ও প্রচেষ্টা হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আর সেই প্রক্রিয়াই মূলত তার লেখা এবং আঁকার মাধ্যমে মানুষের কাছে প্রকাশ করছেন।