যুগ যুগ ধরে এই কথাটি আমাদের দেশের জ্যোতিষ-বিজ্ঞানে এবং পুরাণে অত্যন্ত পরিচিত। এর অর্থ হল সূর্যের উত্তরপথে গমন। ২২শে ডিসেম্বর থেকে ২১শে জুন অবধি সূর্য উত্তরমুখে যায়। ২২শে জন থেকে ২১শে ডিসেম্বর অবধি গতি পরিবর্তিত করে সূর্য যায় দক্ষিণমুখে। সৌরজগৎ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে এই নিয়মের প্রবর্তন হয়েছে। আজও তা তেমনি অক্ষুণ্ণভাবে বজায় আছে। ভারতবর্ষের হিন্দুদের বিশ্বাস, সূর্যের এই গতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বর্গরাজ্যের দিন ও রাত শুরু হয়। অর্থাৎ সূর্য যখন উত্তরায়ণে যায় স্বর্গরাজ্যে তখন শুরু হয় দিন, আর যখন দক্ষিণায়নে যায় স্বর্গরাজ্যে তখন শুরু হয় রাত্রি। দেবতারা তখন করেন বিশ্রাম। এর সঙ্গে সঙ্গে আর একটা বিশ্বাস ও আছে তা হল উত্তরায়ণের সময় যদি কারুর মৃত্যু হয়, তা হলে তিনি যান স্বর্গে। আর দক্ষিণায়নের সময় যদি কারুর মৃত্যু হয়, তাঁর গতি হয় নরকে। — কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবদের পক্ষের প্রধান সেনাপতি ছিলেন ভীষ্মদেব। তাঁর ছিল ইচ্ছামৃত্যু। তাঁর পিতা, মহারাজ শান্তনু তাঁকে এই বর দিয়ে গিয়েছিলেন। যুদ্ধে তিনি গ্রহণ করেন শরশয্যা অর্থাৎ তাঁর সমস্ত দেহ শায়িত হয় তীরের ওপর। মাথাটা ছিল কেবল বাকী। তাঁরই আদেশে অর্জুন তাঁর মাথার উপাধান তীর দিয়েই রচনা করেছিলেন। শরশয্যায় শায়িত দেখে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার সর্বাঙ্গ শরবিদ্ধ, তবুও আপনি এ দেহ পরিত্যাগ করছেন না কেন? কেন এই মৃত্যুতুল্য যন্ত্রণা সহ্য করছেন? জবাবে তিনি বলেছিলেন—সূর্য এখনও তার দক্ষিণায়নের যাত্রা শেষ করেনি। আর কয়েকটা দিন মাত্র বাকী! তারপরেই সূর্য শুরু করবে তার উত্তরায়ণের যাত্রা। তখন স্বর্গে হবে দিন। আমি তখনই এ দেহ পরিত্যাগ করে যাব। বসন্তকালে আগে হত মায়ের আরাধানা। তাই মায়ের আর এক নাম বাসন্তী। কিন্তু মায়ের ভক্ত রাবণকে বধ করতে গিয়ে অবতার-পুরুষ রামচন্দ্র দেখলেন মহামায়াকে প্রসন্ন না করতে পারলে রাবণের বিনাশ নেই। তাই তিনি দেবীর আরাধনা করতে শুরু করলেন। কিন্তু মুশকিল হল—এখন যে দক্ষিণায়ন। সব দেবতারাই যে নিদ্রিত। কিন্তু মায়ের আরাধনা তো না করলেও নয় ! দক্ষিণায়ন সত্ত্বেও তিনি বসলেন মায়ের আবাহনে। তাই এই শারদীয়া পূজাকে বলা হয় অকালবোধন। সেই থেকেই উত্তরায়ণের পূজা শুরু হয়ে যায় দক্ষিণায়নের সময়।
দেব সাহিত্য কুটীর বাংলা সাহিত্যে অন্যতম প্রথম ও প্রধান প্রকাশনা সংস্থা৷ এই সংস্থার প্রতিষ্ঠা কাল ১৮৬০৷ দেব সাহিত্য কুটীর প্রকাশিত অভিধান এবং ধর্মগ্রন্থ প্রথম থেকেই সবজ্যিনপ্রিয়৷ এছাড়া শিশু ও কিশোর পাঠ্য নানা ধরনের বই, ইংরেজি ক্লাসিক্সের অনুবাদ এবং শারদীয়া বার্ষিকী প্রকাশে দেব সাহিত্য কুটীর অন্যতম প্রধান পথিকৃৎ৷ অধুনা রড়দের এবং ছোটদের জন্য নানা ধরনের গল্প সংকলন, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনি এবং কমিকসও প্রকাশ করে চলেছে এই সংস্থা৷ এই সঙ্গে রয়েছে ছোটদের জন্য অসাধারণ একটি মাসিক পত্রিকা শুকতারা যা ৭০ রৎসরেও সগৌরবে এগিয়ে চলেছে৷ আর ৫৮ বছর ধরে রড়দের মনোরঞ্জন করে চলেছে মাসিক নবকল্লোল পত্রিকা৷ ণ্ডণে মানে বাংলা প্রকাশনা শিল্পে দেব সাহিত্য কুটীরইঁ এখনও এক এবং অদ্বিভীয়৷