ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। আমার পিতা এস.এম.মাহমুদ আলী ও মাতা মোসাম্মৎ মানিকজান দুজনই সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। বাবা খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি মাইনর স্কুল থেকে মেধা বৃত্তি লাভ করেছিলেন। সার্টিফিকেট অনুযায়ী আমার জন্ম তারিখ ০১-০৮-১৯৪৮ খ্রিঃ হলেও আমার প্রকৃত জন্ম ১৯৪৩ সালের প্রথম দিকে। বৃটিশ শাসন আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তানী শাসন এবং স্বাধীন বাংলাদেশ দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। যদিও বৃটিশ শাসন আমলের কথা তেমন স্মরণে নেই। বেড়ে উঠা, লেখাপড়া এবং সংগ্রামে অংশগ্রহণ সবই পাকিস্তানী শাসন আমলে। বুদ্ধিজ্ঞান হওয়ার পরেই জীবনে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব পড়ে। নিম্ন শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরি আমার জীবনে প্রভাব ফেলেছিলো। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত সকল আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং ১৯৭১ সালের ‘মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধ করার সুযোগ হয়েছিলো। জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ এবং অসুস্থ-আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা। ক্ষুদ্র জীবনে চেষ্টা করেছি সঠিক শিক্ষায় দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানুষ করে গড়ে তুলতে। ফলে শত শত ছাত্র আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ-ব্যারিস্টার, সরকারি কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষক, প্রভাষক, সহকারী শিক্ষক হয়েছে। বইটিতে প্রথমে শুধু মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে চেয়েছিলাম। তাই জীবনের অন্যান্য কিছু লিখতে গিয়ে বাল্যকাল থেকে কিছু প্রসঙ্গ আসায় হয়তো পাঠকের মনে বিরক্তি আসতে পারে। যেহেতু আমি পেশাদার লেখক নই, বিরক্তির কারণটুকু নিজ গুণে ক্ষমা করবেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে সৃষ্টিকর্তার নিকট এতটুকুই চাওয়া, ইমান নিয়ে যেন তাঁর কাছে যেতে পারি।