একটা সময় ছিল, যখন আমরা জানতাম না, কীভাবে পড়তে হয়, জানতাম না, ইলম-অর্জনের সঠিক পথ কোনটি, সেই পথের পাথেয়ই বা কী। আর আদবের বিষয়গুলো যেন অধরাই ছিল। অবশেষে মহান আল্লাহর ফজলে আমরা জানতে পারলাম, পড়ার সঠিক পদ্ধতি কী, জেনে গেলাম, এ পথের পাথেয় কী। আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিষ্টাচারের বিবরণও জানলাম আল্লাহর রহমতে। এসব জানার নেপথ্যে মাধ্যম হলেন আমাদের মহামতি উলামাগণ। যাঁরা দরদমাখা নসিহত আর পথনির্দেশনা দিয়ে উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন কোন পথে রয়েছে তাদের প্রকৃত ইলমের সন্ধান। যেই ইলমের পথ চলে গেছে সিধা জান্নাতের পানে। আল্লাহ আমাদের উলামাদের সর্বোত্তম প্রতিদান দিয়ে সুখময় করুন। আমাদের জনকতুল্য জীবিত উলামাদের হায়াত কল্যাণের ওপর দরাজ করুন আর আমাদেরকে উপকৃত করুন তাঁদের ইলম থেকে। কারণ সুনির্ধারিত পথ, পথের সম্ভাব্য বিপদাপদ, আর পথচলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে না জানলে মানুষ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে অনেক বিলম্বে। যেমনটি বলেছেন ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ তাঁর ‘ফাওয়ায়িদ’ গ্রন্থে। এটা উলামাগণের তরফ থেকে উম্মতের প্রতি অনেক বড়ো ইহসান। যদিও আমরা ইলমের সুবিস্তীর্ণ পথের খুঁটিনাটি পাথেয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নই। তবুও আমরা সেসব খুঁটিনাটির অনেক বিষয় জানতে পারি উলামাদেরই মারফতে। আর এরকম বিষয়ে জানার মতো একটি চমৎকার বই আল্লামা সালিহ বিন আব্দুল্লাহ আল-উসাইমি হাফিযাহুল্লাহ বিরচিত– ‘ইলম-অর্জনের নীতিমালা।’ শাইখ এখানে ইলম-অর্জনের বিশটি মূলনীতি আলোচনা করেছেন, যা সর্বস্তরের তালিবুল ইলমের পথকে উদ্ভাসিত করে দেবে। বক্ষ্যমাণ অনূদিত পুস্তিকায় আমরা কুরআনের আয়াত ও হাদিসের রেফারেন্স যুক্ত করেছি। আর ন্যায়নিষ্ঠ সালাফ ও পরবর্তী যুগের ইমামদের বক্তব্যের বিস্তারিত রেফারেন্স লেখক নিজেই যুক্ত করেননি, বিধায় আমরাও নিজে থেকে রেফারেন্স যুক্ত করার প্রয়োজন অনুভব করিনি। বলা বাহুল্য, শাইখ সালিহ উসাইমি আমাদের সুপরিচিত ইমাম শাইখ ইবনু উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ নন। বরং ইনি ইবনু উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহর ছাত্র এবং সৌদি আরবের অত্যন্ত যশস্বী সব্যসাচী বিদ্বান। তিনি সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নাবাবিতে দারস প্রদান করেন। শাইখের বই সকল স্তরের তালিবুল ইলমের পাশাপাশি জনসাধারণের জন্যও ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা আশা রাখি। বই সংশ্লিষ্ট সবাইকে আল্লাহ বরকত দিন, আর আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাকে কেবল তাঁরই জন্য একনিষ্ঠ করুন। আমিন।