বই পরিচিতি কবির অন্তর্জগতে সৃষ্ট ভাবের শুদ্ধতম বহিঃপ্রকাশ হলো কবিতা। কবিরাও মানুষ। মানুষে মানুষে চিন্তার-ভাবের ভিন্নতা রয়েছে। সঙ্গত কারণেই ভাবের বহিঃপ্রকাশে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কবিতার শরীর নির্মাণ তাই একরকম হয় না। আবার কবিতার ব্যাকরণিক দিকেও ভিন্নতা রয়েছে-ছন্দ-মাত্রা ইত্যাদি প্রয়োগেও একেক জন কবি একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। এসব ভিন্নতা রয়েছে বলেই পাঠক প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আঙ্গিকে কবিতা পাঠের অপার আনন্দ উপভোগ করেন। ‘ফিরে আর আসবে না তুমি’ নামের এই কাব্যগ্রন্থের কবি পেশায় শিক্ষক, কলেজের অধ্যক্ষ তিনি সাহিত্যের দ্বার অতিক্রম করে এই জগতে প্রবেশ করেছিলেন গদ্য সাহিত্যের সওগাত হাতে নিয়ে। ভিন্নমাত্রার সামাজিক উপন্যাস লিখে ক্রমে অগ্রসর হতে হতে কাব্যলক্ষ্মীর পাদপদ্মে সমর্পিত হতে চলেছেন। এটাই তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ। পাঠক ড. নজরুল ইসলামকে এবার নতুন করে চিনতে পারবেন। গদ্য সাহিত্যেও যেমন তিনি একটি ভিন্নমাত্রা সংযোজনে সক্ষমতা দেখিয়েছেন কবিতার ক্ষেত্রেও তিনি সেই স্বকীয়তা বজায় রেখেছেন পূর্ণমাত্রায়। কবি হিসেবে তার এই আত্মপ্রকাশ অনন্য বললেও অতিশয়োক্তি হবে না। তার কবিতায় অনন্যতা হলো- কবিতাগুলো এক-একটি সহজ ও বোধগম্য গল্প; পড়তে পড়তে পাঠকের মনোজগতে একটা চমৎকার দৃশ্যপট আপনা থেকেই কল্পিত হয়ে উঠবে এবং পাঠক সেই দৃশ্যপটে নিজেরাই একটা অস্তিত্ব টের পাবেন। জোর করে কোনো শব্দ প্রয়োগের প্রবণতা নেই তার কবিতায়, প্রায় মেদহীন ঝরঝরে ভালো এবং ভাষা সাবলীল। অনায়সে পাঠযোগ্য এই কাব্যগ্রন্থখানি যেকোনো পাঠকের বোধগম্য ও আনন্দের উপকরণ হতে পারবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের আরও প্রত্যাশা- ড. নজরুল ইসলামের কাব্যজগতে এই অভিষেক সফল ও সার্থক হবে এবং পাঠকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি আগামীর পথে অগ্রসর হতে অনুপ্রাণিত হবেন।