নির্বাক নজরুল শিষ্যদের কাছে পেলে কেবলই শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে দেখতেন। কখনও হারমোনিয়ামের দিকে হাত দেখাতেন, অর্থাৎ গান শুনতে চাইতেন। গান শুনে তাঁর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ত। শিষ্যরাও কাঁদত। এমন অসাধারণ কবি সৃষ্টিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় নির্বাক হয়ে পড়ে ছিলেন। নজরুলের সৃষ্টিশীল জীবন ১৯২০ থেকে ১৯৪২, মাত্র বাইশ বছরের। সংগীত সৃষ্টির কাল মাত্র এগারো-বারো বছরের। এই সময় বিপুল পরিমাণ গান তিনি রচনা করেছেন। এখনো কবির বৈচিত্র্যময় জীবনের নানা দিক গবেষকরা খুঁজে বের করছেন। এমন প্রশংসিত একটি গবেষণা করেছেন দেশের কৃতি নজরুল গবেষক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। তাঁর গবেষণা অনেক দিন যাবত মূল্যায়িত হয়ে আসছে। এবার প্রকাশ হচ্ছে তাঁর নতুন বই ‘অন্যরকম নজরুল’। চারটি প্রবন্ধের সম্মিলন ঘটেছে এই বইতেÑ‘নজরুল সংগীতের চিরায়ত শ্রুতিময়তা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সম্প্রচার’, ‘নজরুলের ফ্যাশন সচেতনতা’, ‘প্রযুক্তিমনষ্ক নজরুল’ এবং ‘অনচ্ছতামুক্ত মূল্যায়নের বিপ্রতীপে নজরুল’। চারটি বিষয় অভিনব। রচনাগুলোর মাধ্যমে জাতীয় কবির সৃজনশীলতা ও ব্যক্তিগত অনুষঙ্গের নতুন পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কে পাঠক অবহিত হবেন। বাংলাভাষী পাঠকের কাছে নজরুল এবং তাঁর গান ভীষণ জনপ্রিয়। তাঁর গানে ব্যক্তির মানবিক চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক মুক্তিবুদ্ধির প্রস্ফুটন ঘটেছে। তিনি ত বেশ রুচিশীল ফ্যাশন সচেতন ছিলেন। বর্তমান বইতে গবেষকের সৃজনশীলতা ও মননশীলতার প্রকাশ পেয়েছে--যা পাঠকের কাছে আদরনীয় হবে।