তোমরা যখন আধো আধো কথা বলতে, যখন র বলতে গিয়ে ল বলে ফেলতে এবং আম-আম-আম্বা করে খুশিতে নেচে উঠতে, ঠিক তখন থেকেই তোমরা কিন্তু আবৃত্তি করছ। তার মানে দাঁড়াল-আবৃত্তি করতে করতেই কথা বলতে শিখেছ। আসলে কথা বলার আগেই আমরা আবৃত্তির অনেকটাই শিখে ফেলি। কোনোকিছু বারবার বলাটাও আবৃত্তি। তোমরা যখন কথা বলা শিখেছ তখন একই বর্ণ শব্দ বাক্য বারবার বলতে। মনে পড়ছে? না না, আমরা তো দুয়েক বছর বয়সের কোনোকিছুই মনে করতে পারি না। তবে মা-বাবারা আমাদের সেই ছোট্টোবেলার কথা মনে করে খুব আনন্দ পান। আমাদের আবৃত্তির প্রথম শিক্ষক মা। মায়ের পরে বাবা এবং খুব কাছের মানুষগুলোই আমাদেরকে কথা বলতে শিখিয়েছেন। আবৃত্তি শেখার প্রথম ধাপই হল কথা বলতে শেখা। আমরা যে কথাগুলো সবসময় বলতে থাকি, সেই কথাগুলোই একটু একটু করে গুছিয়ে সুন্দরভাবে বললে আবৃত্তির মতো শোনায়। সবচেয়ে সুন্দর শব্দ বাক্য ছন্দ দিয়ে ছড়া কবিতা লেখেন কবিরা, তাই কবিদের লেখা ছড়া কবিতা খুব যত্নকরে শুদ্ধ উচ্চারণে তাল লয় ছন্দ ঠিক রেখে আবেগ দিয়ে বললেই আবৃত্তি হয়ে যায়। বুঝতেই পারছ, আবৃত্তি খুব কঠিন কিছু নয়। এই বইয়ের ছড়া কবিতাগুলো বারবার পড়ে এবং আবৃত্তি করে তোমরা খুবই আনন্দ পাবে। আর হ্যাঁ, অনুষ্ঠানে এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যও এখান থেকে ছড়া কবিতা বেছে নিতে পারবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা। একদিন তোমরাই করবে জয়। রবিশঙ্কর মৈত্রী আবৃত্তিকার, প্রশিক্ষক, লেখক প্যারিস, ফ্রান্স
রবিশঙ্কর মৈত্রীর জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। বাবা ঋত্বিক কুমুদরঞ্জন, মা জয়ন্তী দেবী । পৈত্রিকনিবাস ফরিদপুর জেলার মধুখালি উপজেলার নরকোণা গ্রামে। শৈশব থেকেই লেখালেখি শুরু। প্রথম কবিতা লেখা এবং সম্পাদনা দেয়াল পত্রিকায় প্রথম প্রকাশ, মাসিক সন্দীপনা পত্রিকায়, এরপর জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিকে ছােটোগল্প প্রবন্ধ প্রকাশিত। প্রথম উপন্যাস জলগুহ, প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে, তারপর থেকে প্রতি বছরই রবিশঙ্কর মৈত্রী বই। প্রকাশিত হচ্ছে এ যাবত তাঁর পঞ্চাশটি বই প্রকাশিত। রবিশঙ্কর মৈত্রী দেশহারা হলেও এক অবিচল। জীবনযােদ্ধা তিনি মরমী ভাবের মানুষ। মরমী ভাব বিতরণের মধ্য দিয়ে শুদ্ধ সত্য সুন্দর মানুষের সম্মিলন রচনাই তার ব্রত। রবিশঙ্কর মৈত্রী আবৃত্তি করেন। আবৃত্তির প্রশিক্ষক। তিনি সাংগঠনিক আবৃত্তিচর্চা করছেন ১৯৯৩ থেকে, আবৃত্তি প্রশিক্ষণের জন্য রবিশঙ্কর মৈত্রী ঘুরেছেন বহুস্থানে বহুবার। বাংলাভাষা ও সাহিত্যের শুদ্ধ চর্চার জন্য তিনি নিরন্তর কাজ করেছেন। আবৃত্তিচর্চার ভেতর দিয়ে নতুন প্রজন্মকে মূল্যবােধসম্পন্ন করার চেষ্টা করেছেন রবি। তাঁর আবৃত্তি কবিতাপ্রেমীদের কাছে আদৃত। সাহিত্য সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি রবিশঙ্কর মৈত্রী ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি টেলিভিশনের জন্য শতাধিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। ফাদার মারিনাে রিগন : ভেনিস টু। সুন্দরবন প্রামাণ্যচিত্রটি দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত। রবিশঙ্কর মৈত্রী এখন ফরাসি দেশবাসী।