রাসূল-এর যুগে এবং তার পরবর্তী ছাহাবীদের যুগে যেভাবে মানুষ দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, বর্তমানে সেই কুরআন ও হাদীছ অক্ষুণ্ণ থাকলেও মানুষ সেভাবে দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করেনা। বরং বর্তমানে মিডিয়ার যুগ হওয়ার পরেও যারাই ইসলাম গ্রহণ করছেন তারা সবাই বিচ্ছিন্নভাবে ইসলাম গ্রহণ করছেন। সমগ্র এলাকা সমগ্র শহর সমগ্র দেশ একবারে ইসলাম গ্রহণের নজির বর্তমান পৃথিবীতে নাই। তার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, পবিত্র কুরআন ও হাদীছ অক্ষুণ্ণ থাকলেও আল্লাহর রাসূল এবং তার ছাহাবীদের মতো সেই উন্নত চরিত্র সম্পন্ন মুসলিম আর নাই। সেই অমায়িক ব্যবহার ও শ্রদ্ধার মতো ব্যক্তিত্ব আর নাই। যাদের আচার-ব্যবহার ও ব্যক্তিত্বে প্রভাবিত হয়ে মানুষ দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করবে। স্বর্ণযুগের আনছার ও মুহাজিরদের মতো সেই ভ্রাতৃত্ব আর নাই। মুসলিম-মুসলিম ভাইয়ে ভাইয়ে সেই ভালোবাসা আর নাই। ছালাত আছে, ছিয়াম আছে, মসজিদ আছে কিন্তু মুছল্লীদের মন হিংসায় পরিপূর্ণ। দাওয়াত আছে দল আছে আন্দোলন আছে কিন্তু কর্মীদের মন বিদ্বেষে ভরা। অন্য দল অন্য সংগঠন অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নেতাদের অন্তর অহংকারের রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো মুসলিম সমাজে। এমনকি যারা সঠিক আক্বীদা ও আমলের সংস্কারে কাজ করছেন তাদের মধ্যেও পারস্পারিক বিদ্বেষ আজ চরমে পৌঁছে গেছে। মানহাজের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সেটাকে এত সংকীর্ণ করে দেওয়া হয়েছে যে, নির্দিষ্ট দেশের নির্দিষ্ট আলেমদের সাথে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যাকে তাকে কাফের ফতওয়া দেওয়া যেমন এক প্রকার খারিজিয়্যাত, তেমনি মানহাজের দোহাই দিয়ে মুসলিমের সাথে কাফেরের মতো ব্যবহার করাও এক প্রকার খারিজিয়্যাত। এই ধরণের খারিজিয়্যাতকে খণ্ডন করার জন্যেই মদীনার প্রখ্যাত আলেম সালাফগণের অবশিষ্ট চিহ্ন শায়খ আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ হাফিযাহুল্লাহ এই বইটি লিখেছেন। আল-ইতিছাম গবেষণা বিভাগের সম্মানিত গবেষণকবৃন্দ এই বইটি অনুবাদ করেছেন। বইটি সম্পাদনা করেছেন প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিযাহুল্লাহ। আমরা বইটি প্রকাশ করতে পেরে সর্বাগ্রে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আমরা মহান আল্লাহর নিকট বইটির উত্তরোত্তর কবুলিয়্যাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ বইটির লেখক, অনুবাদক ও সম্পাদকসহ প্রকাশ করা পর্যন্ত সহযোগিতাকারী সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!