আল-হামদুলিল্লাহ! মহান আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া। যার দয়া ও রহমতের বদৌলতে আমাদের স্বপ্নের 'মাকতাবাতুস সালাফ' কল্পনার জগত থেকে বাস্তব জগতে পদার্পণ করছে। 'আল-ইতিছাম গবেষণা বিভাগ' নামক যে বীজ রোপন করা হয়েছিল, তার অংকুরোদগম হয়ে এখন ফুল ও ফল দেওয়া শুরু করেছে। করোনার দুই বছরে যখন মানুষ ছিল ঘরবন্দী, পৃথিবী ছিল স্তিমিত, পৃথিবীর সেই ক্রান্তিলগ্নে ভাগ্যক্রমে দেশে থাকার সুবাদে সময়টা কাজে লাগানোর সুযোগ হয়। আমার ভগ্নিপতি বাকী বিল্লাহ ইউসুফও সেই সময়ে কাকতালীয়ভাবে দেশে আটকা পড়ে যান। দুইজনে মিলে সময়টা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা। যেই ভাবা সেই কাজ। নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সম্মানিত চেয়ারম্যান শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ-এর নিকট আমাদের পরিকল্পনা জানিয়ে সহযোগিতা চাইলাম। তিনি সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। আশ্বাস পেয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করলাম। শুরু হলো পৃথক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার প্রাণান্তকর চেষ্টা। একদম নতুন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম ছিল। আমাদেরকে একদম শূন্য থেকে আরম্ভ করতে হয়েছে। অফিস করার মতো আমাদের প্রস্তুত কোনো জায়গা পর্যন্ত ছিল না। বায়তুল হামদ জামে মসজিদের এক কোণে গ্লাস দিয়ে ঘিরে 'আল-ইতিছাম গবেষণা বিভাগ' এর যাত্রা শুরু হয়। হৃদয় ও মনের সকল আবেগ মিশিয়ে আমরা ধীরে ধীরে সামনে এগোতে থাকি। আমি ও বাকী বিল্লাহ ভাই বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সফর করি এবং তাদের গবেষণা ও অনুবাদ বিভাগগুলো সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করি। বাকী বিল্লাহ ভাইয়ের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য ছিল- তিনি শুরু থেকেই বিশ্বমানের পরিকল্পনা ও চিন্তা করতে পছন্দ করতেন। নির্দিষ্ট কোনো ঘরানার সাথে তুলনা দিতে কোনো সময়ই পছন্দ করতেন না। প্রতিযোগী বানাতে হলে দেশের জাতীয় পর্যায়ে যারা কাজ করছে তাদেরকে প্রতিযোগী ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। সেই উঁচু হিম্মত সাথে নিয়েই আমাদের পথচলা। এই যাত্রায় আমরা ধীরে ধীরে গবেষণাগার থেকে নিজস্ব প্রেস পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হই। শায়খ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ এ-এর লিখিত বইগুলোর পরিমার্জন থেকে শুরু করে শিশু- কিশোর পত্রিকা 'ত্রৈমাসিক কিশলয়' প্রকাশ পর্যন্ত সবই ছিল সেই কল্যাণকর যাত্রার সুন্দর ফসল। ফালিল্লাহিল হামদ।