'পৃথিবীতে মঙ্গলগ্রহের মানবশিশু উপন্যাসটি মূলতঃ রাশিয়ার 'বরিসকা কিপ্রিয়ানোভস্কি' নামে নয় বছরের এক বালককের অবিশ্বাস্য কাহিনি নিয়ে লিখিত। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার জাতীয় দৈনিক 'প্রাভদা' পত্রিকা বরিসকার একটা সাক্ষাৎকার ছাপে। সেই সাক্ষাৎকারে বরিসকা কিপ্রিয়ানোভস্কি দাবী করে, সে পৃথিবীতে জন্ম নেবার আগের জন্মে মঙ্গলগ্রহের অধিবাসী ছিলো। রাশিয়ার ভলগোগ্রাড় শহরে তার জন্ম ১১ জানুয়ারি ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে। সেই হিসাবে বর্তমান তার বয়স ছাব্বিশ বছর। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের সাক্ষাৎকারে সে জানিয়েছিলো, পৃথিবীতে তার জন্ম নেওয়ার আসল উদ্দেশ্য মানবজাতিকে রক্ষা করা। ভবিষ্যতে পৃথিবী এক ভয়ানক পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। রাশিয়া হতে সেই যুদ্ধের সুত্রপাত ঘটবে। পারমাণবিক যুদ্ধ যাতে না হয় ও পৃথিবীবাসী যাতে এই ভয়াবহ সংকট থেকে পরিত্রাণ পায়, তেমন মিশনে সে পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছে। ২০১৫ সালে তার সাক্ষাৎকার সারাবিশ্বের প্রেস মিডিয়াতে আলোড়ন তোলে। সে বলেছে, 'পৃথিবীর একটা বৃহৎ মহাদেশে প্রথম মহাবিপর্যয় ঘটবে। সেটা সমগ্র বিশ্বকে প্রভাবিত করবে এবং অপেক্ষাকৃত কম মানুষ বেঁচে থাকবে। এছাড়াও পৃথিবীতে ভয়ানক বন্যা দেখা দেবে।' এই বইয়ে বরিসকাকে সামনে রেখে 'অ্যালেক্সে' নামে কাল্পনিক চরিত্রের মাধ্যমে তার সমুদয় ঘটনা ও ভবিষ্যৎবাণী এই উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বরিসকার পরিবারে ঘটা নানাবিধ অলৌকিক ঘটনাগুলোকেও উপন্যাসের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে বর্ণিত হয়েছে। এছাড়াও উপন্যাসের কাহিনি প্রসঙ্গে মঙ্গলগ্রহে নাসার 'পারসিভারেন্স রোভার' নামানো, মহাবিশ্বের অসীম রহস্য, গ্রহ-উপগ্রহ, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি এবং সৌরজগতের বহুবিধ রহস্যসমূহকে অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। শেষপর্যন্ত অ্যালেক্সের জীবনে কী ঘটেছিলো, তার মিশনের পরিণতিই বা কী তা জানতে কিশোর-কিশোরীদের উপন্যাসটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।